শিল্পে সর্বোচ্চ ও গৃহস্থালিতে সবচেয়ে কম অগ্রাধিকার দিয়ে ‘প্রাকৃতিক গ্যাস বরাদ্দ নীতিমালা, ২০১৯’ জারি করেছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে গত ১১ ডিসেম্বর নীতিমালাটি জারি করা হয়। অর্থনীতিতে ভূমিকার গুরুত্ব অনুযায়ী গ্যাস বরাদ্দের ক্রম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে সরবরাহকৃত প্রায় ৩২০০ এমএমসিএফডি প্রাকৃতিক গ্যাসের মধ্যে দেশজ উৎপাদন প্রায় ২৭০০ এমএমসিএফডি। দেশে গ্যাসের চাহিদা পূরণে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আকারে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানির পরিমাণ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে।
উল্লেখ্য যে, আমদানিকৃত এলএনজির ব্যয় দেশজ সরবরাহকৃত গ্যাসের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এ অবস্থায়, ‘সরকারের ভিশন-২০২১’ ও ‘ভিশন-২০৪১’ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে একদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন যোগান নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, প্রাকৃতিক গ্যাসের দেশজ সরবরাহের সীমাবদ্ধতার পরিপ্রেক্ষিতে যেসব খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে অধিকতর ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হবে, সেসব খাত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিহ্নিত করা এবং সে অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে নীতিমালায় বলা হয়।
‘জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রণীত পরিকল্পনায় খাতভিত্তিক প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এছাড়া জ্বালানি দক্ষতা, পণ্য উৎপাদনে বিকল্প জ্বালানির উৎস, জাতীয় উৎপাদনশীলতা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় বিবেচনায় রেখে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ও বরাদ্দ নির্ধারণ করা যৌক্তিক হবে। এলএনজি আকারে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘কাজেই বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি মোকাবিলার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে সক্ষম খাত/প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বের বিবেচনায় খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার চিহ্নিতকরণ, বিক্ষিপ্তভাবে স্থাপিত শিল্পের পরিবর্তে পরিকল্পিতভাবে নির্ধারিত শিল্পাঞ্চলে স্থাপিত শিল্পকে অগ্রাধিকার ও প্ল্যান্ট/যন্ত্রপাতির দক্ষতার বিষয়গুলো গ্যাস বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে।’
বাণিজ্যিক খাতে স্বল্প পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা থাকায় এ খাতে প্রাকৃতিক গ্যাস বরাদ্দ নিরুৎসাহিত করতে হবে জানিয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘তবে হাসপাতালের মতো জরুরি সেবা খাতে এ বিষয়টি শিথিলযোগ্য। বিশ্বব্যাপী দিন দিন ইলেকট্রনিক, হাইব্রিড ও ব্যাটারিচালিত গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া সিএনজি সাধারণভাবে ছোট গাড়িতে ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের গাড়িতেও অটোগ্যাসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই জ্বালানি বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে পরিবহন খাতে সিএনজির পাশাপাশি অটোগ্যাস ব্যবহারকে উৎসাহিত করা যৌক্তিক।’
১৬ডিসেম্বর,২০১৯ at ১৩:৩৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/জানি/এমএন