মিরসরাইয়ে ১৮’শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ

মিরসরাইয়ে চলতি বছর ১৮’শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজীর চাষ করা হচ্ছে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার বিভিন্ন কৃষি জমিতে এখন পর্যন্ত ১২’শ হেক্টর মূলা, লাল শাক, পালং শাক, বেগুন, টমেটো, শীম সহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজীর চারা ইতমধ্যে রোপন করা হয়েছে। শীতের শুরুতে সবজী বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

সম্প্রতি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে কৃষি জমিতে কথা হয় রেদোয়ানুল হক ও কামাল উদ্দিনের সাথে। রেদোয়ানুল হক বলেন, তিনি ১৫ শতক জমিতে বেগুন ও ১৮ শতক ফুলকপি চাষ করেছেন। বুলবুলের অতিরিক্ত বৃষ্টি কারণে জমিতে আদ্রতা তৈরী হয়ে যাওয়ায় অনেক চারা মারা গেছে। তবুও শেষ মুর্হূত্বে চারা পরিবর্তন করছেন। যাতে লোকসান না হয়।

কামাল উদ্দিন বলেন, তিনি ১৫ শতক জমিতে ক্ষিরা চাষ করেছেন। সাথে সাথী ফসল হিসেবে লাল শাকের বীজও ফেলেছেন। ক্ষীরার আগে লাল শাক বিক্রীর উপযোগী হয়ে গেছে। বাজারে লাল শাকের এখন ভালো দাম। প্রতি মুষ্টি লাল শাক ১৮-২০ টাকা পাইকারী বিক্রী হচ্ছে বাজারে। লাল শাক বিক্রী শেষে ক্ষীরার জন্য জৈব সার দিবো।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৬ হেক্টর জমিতে মূলা উৎপাদন যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৯’শ ২০ মেট্রিক টন, ৭৫ হেক্টর জমিতে লাল শাক যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪’শ ৯৫ মেট্রিক টন, ১৫ হেক্টর জমিতে পালংশাক যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ মেট্রিক টন, ১’শ ১০ হেক্টর জমিতে বেগুন যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৩’শ ৪০ মেট্রিক টন, ১’শ ২০ হেক্টর জমিতে টমেটো যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৪’শ মেট্রিক টন, ৬০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৭’শ ৮০ মেট্রিক টন, ৫০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৪’শ মেট্রিক টন, ১০ হেক্টর জমিতে ফান্সবিন যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬০ মেট্রিক টন, ৬’শ হেক্টর জমিতে শীম যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৬’শ মেট্রিক টন, ১’শ ১০ হেক্টর জমিতে লাউ যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৬’শ ৮০ মেট্রিক টন, ১ হেক্টর জমিতে ওলকপি যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৬ মেট্রিক টন, ৭ হেক্টর জমিতে শালগম যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১’শ ১৯ মেট্রিক টন, ৯৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৭’শ ৬৫ মেট্রিক টন, ৫৫ হেক্টর জমিতে মূলা শাক যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪’শ মেট্রিক টন, ৮৫ হেক্টর জমিতে বরবটি যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৯’শ ৩০ মেট্রিক টন, ৫৫ হেক্টর জমিতে করলা যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬’শ ৫৫ মেট্রিক টন, ২’শ ৯২ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ১’শ ৩৬ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ রাহা বলেন, উপজেলাতে ১২’শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজী চাষ করা হয়েছে। আরো ৬’শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সবজীর চারা মারা গেলেও কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে শীতকালীন সবজী বাজারে আসতে শুরু করবে। বেগুনের ছত্রাক সহ শীতকালীন সবজির ভাইরাস জনিত সকল রোগের কৃষি সহায়তা দিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উপ-কৃষিসহকারীরা কাজ করছে বলে জানান তিনি।