এক গ্রামে ৯০০ শিশু এইচআইভি আক্রান্ত !

প্রায় ৯০০ শিশু এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত পাকিস্তানের ছোট্ট একটি গ্রামে! চলতি বছরের এপ্রিলে সেখানকার একজন স্থানীয় চিকিৎসক তার ক্লিনিকে আসা শিশুদের উপসর্গ দেখে সন্দেহ করেন। তিনি সেসব শিশুর এইচআইভি পরীক্ষা করার উপদেশ দেন।

আট দিনের মধ্যে এক হাজারের বেশি মানুষের শরীরে এইচআইভি ভাইরাসের উপস্থিতি আছে বলে জানা যায়। শুধু পাকিস্তানেই নয়, এশিয়াতেও এত মানুষের, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে একসাথে এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার নজির নেই বললেই চলে।

পাকিস্তানের ঘটনায় বিস্মিত হওয়ার মত বিষয়টি হলো- সেখানে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়া শিশুদের অধিকাংশের বয়সই ১২ বছরের কম। তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও এই রোগের কোনো উপস্থিতি ছিল না।

শিশুদের ডাক্তার হিসেবে ওই অঞ্চলে ডাক্তার ঘাঙরোর সুখ্যাতি ছিল, তার কাছে চিকিৎসা করানোর খরচও কম ছিল।

উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিশুদের মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণ করার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। এরপর গ্রেফতার করা হয় অনিচ্ছাকৃত হত্যার দায়ে।

আরো পড়ুন:
পাম্প শ্রমিকরা ডিজেল দেননি এমপি’র গাড়িতেও
অটিজম শিশুরা সমাজের বোঝা নয়: শিক্ষামন্ত্রী

ডাক্তার ঘাঙরো বলেন, ‘গত দশ বছর ধরে আমি চিকিৎসা পেশায় আছি। এখন পর্যন্ত একজনও আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেনি যে আমি সুঁই পুনর্ব্যবহার করেছি। আমি স্থানীয়দের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়ও ছিলাম। তাই পেশাগত হিংসা থেকে অন্যান্য ডাক্তার এবং সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ এনেছে।’

কিন্তু আমি কোনো অপরাধ করিনি, দাবি করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ভীষণ চাপের মুখে ছিল। তাদের অযোগ্যতার দায় কারো না কারো ওপর চাপাতে হতো তাদের। বলির পাঁঠা হই আমি।

কয়েক সপ্তাহ পরে পাকিস্তানের সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হওয়া এক তদন্তের পর ডাক্তার ঘাঙরোর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের গুরুত্ব কমানো হয়। অভিযোগ করা হয় যে তার দায়িত্বে অবহেলার মাত্রা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

ডাক্তার ঘাঙরো নিজেও এইচআইভি আক্রান্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারের কিছুদিন পর জামিনে ছাড়া পান তিনি। পাকিস্তানের সরকার এইচআইভির ওষুধ যদিও বিনামূল্যে দিচ্ছে, কিন্তু অধিকাংশ রোগীরই এইচআইভির প্রভাবে শরীরে অন্যান্য যেসব রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকে সেগুলোর ওষুধের খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই।

ডিসেম্বর ০১, ২০১৯ at ১৯:৫৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/বাপ্র/এএএম