তাড়াশে সংসদ সদস্য ডাঃ আজিজের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন

“হ্যালো লীডার” মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর কথা বলায় সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত তুলে ধরেন। এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আকতারুজ্জামান, ছোলায়মান হোসেন, শ্রী ভুলন চন্দ্র, উষা রানী প্রমূখ।  লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১০ নভেম্বর-২০১৯ইং তারিখে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন ‘একুশে টেলিভিশন’এ “হ্যালো লীডার” নামে একটি অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের কাছে উপস্থাপক জানতে চান ‘আপনার এলাকার মানুষ মেম্বারদের টাকা দেন, চেয়ারম্যানদের ঘুষ দেন বয়স্ক ভাতার কার্ড নিতে।

এরকম অভিযোগ আপনি জানেন কিনা? জবাবে, এমপি বলেন, একজন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, আমি তার নাম বলতে চাই না। এসময় উপস্থাপক জানতে চান, তাকে কি ভয় পান? জবাবে এমপি সাহেব বলেন, বাবলু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তিনি তাড়াশ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ওই অনুষ্ঠানে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার দেখানো হয়েছে। সেখানে কেউই আমার নাম বলেননি, রেজাউল নামে একজন মেম্বারের নাম বলেছেন ভুক্তভোগীরা।

অথচ, রেজাউল নামে একজনও ইউপি সদস্য তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদে নাই। তাহলে আমার নাম কেন সেখানে বলা হলো? ওই জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে ভিত্তিহীন তথ্যে আমাকে হেয় করা হয়েছে। তিনি এমপির বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ করেন। এমপি মহোদয় যেমন একজন জনপ্রতিনিধি, আমিও একজন জনপ্রতিনিধি। কাজেই আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি তিনি গঠন করতে পারেন না।

ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আরেকটি কথা বলতে চাই, আর দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে যখন কারো নাম বলবেন, তখন সঠিক নামটিই বলতে হয়। আমি মোঃ বাবুল শেখ, বাবলু নয়। অবশ্য এমপি সাহেব আমার সঠিক নাম জানার কথাও নয়। কারণ আমাকে তো রাজপথে দেখেননি। কখনো এক সঙ্গে মিছিলও করা হয়নি। আমি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একজন কর্মী ও নৌকা প্রতিকের জনপ্রতিনিধির নাম বলতে পারি না, তাহলে বোঝেন তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে কতটুকু জড়িত ছিলেন।

আমি পারিবারিকভাবে এবং স্কুল জীবন থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতি সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। আওয়ামীলীগের চরম দুঃসময়ে বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময়ে আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। দলের দূর্দিনে সংগঠনকে সুসংগঠিত করা জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হামলা, মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছি।

দলে দুঃসময়ে ভূমিকা রাখার অবদান হিসেবে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা  শেখ হাসিনা আমাকে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দেন। সদর ইউনিয়নবাসী আমাকে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেন। সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে আমিই সবচেয়ে কনিষ্ঠতম জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হই।

আরো পড়ুন :
চৌগাছায় গলায় রশি দিয়ে এক স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যা
৫৪০ কোটি ‘ফেক আইডি’ মুছে ফেলেছে ফেসবুক

আমি ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও নানা কারনে পরিবেশটা আমার পক্ষে ছিলো না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেদিয়ে আমি মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। আমি মানুষ আমারও ভুলত্রুটি থাকতে পারে। তবে জানা মতে কখনো কোনদিন কোন অন্যায় আমি করিনি।

তারপরও আমার নামে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে। মানুষের সেবা করতে গিয়ে আমি বার বার নানামুখী ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। এই চক্রান্তে জড়িত হয়েছে একটি বিশেষ মহল যারা চান না, আমি জননেত্রী শেখ হাসিনা হাতকে শক্তিশালী করি। আবার জেনে হোক, আর অজ্ঞতায় হোক নিজ দলের নেতাকর্মী এমনকি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও আমাকে নিয়ে বিভ্রান্তকর কথাবার্তা বলছেন। তাই আমি উল্লেখিত অনুষ্ঠানটি দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তাড়াশবাসী অনুরোধ করছি।

১৪ নভেম্বর, ২০১৯  at ১৮:২১:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/আদিরা/এজে