পেট্রোলের চাহিদা মেটাতে আমদানি হচ্ছে ৪৫ হাজার টন ‘মোগ্যাস’

বর্তমানে দেশে পেট্রলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ‘মোগ্যাস’ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে পেট্রলের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে ৪৫ হাজার টন মোগ্যাস (অকটেন ৯৫ আরোএন) আমদানির সিদ্ধান্ত হয় বলে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হবে বলে জানা গেছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। বিপিসির বাজেট বরাদ্দে জ্বালানি তেল বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে প্রস্তাবিত জ্বালানি তেল আমদানির অর্থায়ন করা হবে বলে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিপিসি দেশের চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ও আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে আসছে। চলতি বছরে দেশে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে মোট চাহিদার ৫০শতাংশ জি-টু-জি প্রক্রিয়ায় নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করে তেল আমদানি চলমান রয়েছে।

২০১৯ সালের জন্য চারটি পার্সেলে মোট ৬০ হাজার টন মোগ্যাস আমদানির জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদন নেয়া হয়। কিন্তু এ পরিমাণ আমদানি, স্থানীয় সরবরাহ গ্রহণ এবং ১০ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানির পরও এ বছরের অবশিষ্ট সময়ের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়নি। জরুরি প্রয়োজনে ইতোমধ্যে জি-টু-জি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইন্দোনেশিয়ার পিটি.বুমি সিয়াক পুসাকো জাপিনের (বিএসপি) কাছ থেকে অনুমোদিত প্রিমিয়ার ও রেফারেন্স প্রাইস অনুসারে ১৫ হাজার টন মোগ্যাস আমদানি করা হয়েছে।

সম্প্রতি বিপিসির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ৩০ হাজার টন মোগ্যাস আমদানির অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে ১৫ হাজার টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্যও জি-টু-জি ভিত্তিতে ১৫ হাজার টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। তবে জানুয়ারি-জুন সময়ে জি-টু-জি ভিত্তিতে ১৬ হাজার ৪০৬ টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ১৮ হাজার ৯২ টন অর্থাৎ মোট ৩৪ হাজার ৪৯৮ টন আমদানি করা হয়। অন্য দিকে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য জি-টু-জি ভিত্তিতে একটি অতিরিক্ত পার্সেলের মাধ্যমে ৩১ হাজার ৮৩৫ টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ১৬ হাজার ৪২৯ টন মোগ্যাস আমদানি করা হয়। মোট ৪৮ হাজার ২৬৪ টন মোগ্যাস আমদানি করা হয়।

আরও পড়ুন:
ঢাবিতে সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি হতে পারছেনা মেধাবী ছাত্র অনিক
ধনে পতা খাওয়ার উপকারিতা

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ের জন্য জি-টু-জি ভিত্তিতে ৩০ হাজার টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ৩০ হাজার টন অর্থাৎ মোট ৬০ হাজার টন মোগ্যাস আমদানির অনুমোদন ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত চাহিদা বাড়ায় জি-টু-জি ভিত্তিতে ৩০ হাজার টনের জায়গায় ৪৮ হাজার ২৪১ টন এবং টেন্ডারের মাধ্যমে ৩৪ হাজার ৫২১ টন মোগ্যাস আমদানি করা হয়।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে পেট্রলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকৃত মোগ্যাস এবং ইআরএলের ন্যাফথা ব্লেন্ডিং করে পেট্রল তৈরি করে দেশের চাহিদা মেটানো হয়েছে। এর ফলে আমদানিকৃত ২৪ হাজার ৪৬১ টন মোগ্যাস পেট্রল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে। তা ছাড়া, গত জুলাই মাস থেকে দেশে সিএনজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অকটেনের চাহিদাও বেড়েছে।

নভেম্বর ১৪, ২০১৯ at ১১:৫১:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/নদি/এআই