পিতৃ বুকে নন্দন, মাতৃ বুকে হনন !

আজ একটু লিখি। আর ফেসবুক এ কে ই বা লেখা পড়ে।পড়লেই বা কি? বাজারে কত বই, পত্রিকার কলাম, অন লাইনে সার্চ দিলেই সব দেখা যায়। তাই কোন কিছু পড়ার দরকার হয় না।

কয়েক দিন আগে “মাতৃক্রোড়ের শিশু পিতৃকোলে হত্যা” লেখার পর যদি পিতৃকোলের শিশু মাতৃকোলে হত্যা” নিয়ে না লিখলে কেমন না !

শিশুকে যুগে যুগে প্রশ্ন করা হত তোমার বাবা’র নাম কি?সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তার জন্য বৈজ্ঞানিক ভাবে পিতৃ জিন কে দায়ী করা যায়।

অনেকেই হয়তো মনে করতে পারবেন সন্তান আগে মা ডাকে না বাবা ডাকে।শিশুরা মাতৃদুগ্ধ পান করে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মা’র নারীর সাথেই নিজের জীবন ধারন তাল মিলায়।

মাতৃ উদরে জন্ম, সৃষ্টি, ভূমিষ্ঠ, মাতৃকোলে অমৃত সুধা পান, মাতৃক্রোড়ে বেড়ে ওঠা, মাতৃভাষায় মা ডাকা সবার আগে!মাতৃভূবনে চলাচল, মাতৃ আঁচল কান্না থামানো। মাতৃত্বে জন্মগত বিশ্বাস, আশা, আশ্বস্ত, আশ্বাস, আস্থা, ভরসা, নিরাপত্তা, নির্ভরযোগ্য নির্ভরতা ।

জন্ম মেকানিজম এর কারনে শিশু পিতৃকোলের উত্তরা ধিকার। মাতৃকোলের অহংকার, অলংকার।

বহু পুত্রের কাঁধে, বহু মাতার শব যাত্রা হয়েছে। শিশু মাকে এক মূহুর্ত দেখতে না পেলে বিরহের অশ্রু দেখে পিতারা পাগল প্রায়।মায়ের অদৃশ্য, অসম্ভব, সীমাহীন চালিকাশক্তি হলো শিশু যা দিয়ে পরিবার হাতের মুঠোয় ঘুরানো যায় ।

মাতৃ ইজ্জত রক্ষায় বহু শিশু র কান্নার শব্দ অস্ত্রের ভূমিকা রেখেছে। নিষ্পাপ চাহনি বহু দাম্পত্য বিচ্ছেদের জোরা লেগে একাকার ।

ঘর আলোকিত করেছে শিশু রাফি। আড়াই বছর বয়স।শরীরে শক্তি নেই। বাবা বলে জোড়ে চিৎকার করতে পারে না। নিরস্ত্র, অসহায়, মায়ের হাতে আশ্রয়, কান্নার মাধ্যমে যাকে খাবারের কথা বলতে হয়। অশ্রুর মাধ্যমে যাকে অসুস্থতার কথা উল্লেখ করতে হয়। হাসির মাধ্যমে যাকে ভালবাসা প্রকাশ করতে হয় ।

এত অসহায় শিশু! মায়ের কোলে নিরাপদ না হলে কোথায় যাবে প্রান রক্ষার্থে। জননীর ললাট, চিবুক, বক্ষ, উদর আর হাতের ডানার বেষ্টনী যদি নিরাপদ না হয় তাহলে মাতৃত্ব কোথায় যেয়ে বংশযাত্রা করবে।

জননীর পেটের ভিতর কাত চিত করেছে বলে নাক মুখ চেপে ধরে প্রতিশোধ নিতে হবে।

বিষন্নতা, হতাশা, ঋনের যন্ত্রণা যাই থাক শিশু রাফির বাবা কাছে থাকলে কি সম্ভব হত। বরং ঘাড়ের উপর বাবু দিয়ে বসে এই ধরনের মায়ের কোলে মুখ ফিরাত না ।

রাশিয়াতে বেশি, অল্প কিছু আমেরিকায় মায়ের বিষন্নতা বা মায়ের সম্মান হানির ঘটনায় শিশু বিসর্জনের ঘটনা বেশি। পরোকিয়ার কিয়া করতে যেয়ে মাতৃত্বকে বর্জন করে, যৌবনকে ভোগ করতে যেয়ে দুই এক জন এমন করে। স্কিজোফেনিয়া রোগীরা শিশুদের প্রতি এমন করে।রূপভান যাত্রার নায়িকা হওয়ার জন্য দু/একজন সন্তানকে দুগ্ধ দেন না বলেও জানা গেছে ।

কয়েক দিন আগে পিতার কোলে শিশু হত্যা ।আবার মা কর্তৃক কয়েক জন শিশু কে হত্যার ঘটনা আসছে।

আসল কথা হল। পিতা বা মাতা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। শুধু মাত্র বংশযাত্রার যাত্রীদের হুজুগে হ য ব র ল করলে শিশুদের নিরাপত্তা নেই। আর দুই একজনের এমন খন্ড মৌবন ধারনা র কাছে মাতৃত্ব বা পিতৃত্বকে দংশিত হতে হচ্ছে মুছে যাচ্ছে, আতুর ঘরের ইতিহাস ঐতিহ্য ।

মা, মাতা, জননী, মাতৃ, মাতৃকা, জন্মদাত্রী, প্রসৃ, অম্বিকা, ঠাকুরানির, ধাত্রী, পালয়িত্রী, এসব নাম, যশ, সম্মান, শিশুর কাছে পরাজিত হবে। এতে করে প্রজনন ও সৃজন বেমানান হয়ে যাবে।

রাফির মত শিশুরা যদি মাতৃক্রোড়ে সুন্দর না হয়। তাহলে কয়েক দিন আগে তো একজনের গেটে ছিল সে তো বেঁচে উঠেছে। নিরাপদে আছে। কিছু কিছু মানুষকে মা, বাবা হতে শিখতে হবে। তখন পিতৃত্ব, পৌরষত্ব, নারীত্ব, মাতৃত্ব জীবনের কোন অংশে স্হান পেলেই সন্তানকে হত্যাকারীদের বিকৃত চিন্তা ভাবনা সঠিক পথে ফিরে আসবে।

মিটি, মিটি চাঁদ তাঁরা র আলোতে, আর রিম ঝিম বৃষ্টি তে টিনের ঘরে,ভৃবনের সেরা ভবনে এসির বাতাসে রোমাঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি, আসুন পিতা বা মাতা হওয়া শিখি।

লেখক:

ইমাউল হক, পিপিএম