ইরানের বিউটি কুইন জারা বাহারি নিজেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দু’সপ্তাহ ধরে নিজেকে একটি কক্ষে আটক রেখেছেন ইরানের বিউটি কুইন হিসেবে পরিচিত বাহারেহ জারা বাহারি। তিনি ফিলিপাইনেই আশ্রয় প্রার্থনা করছেন। কারণ, তার দাবি তাকে ইরানে ফেরত পাঠানো হলে হত্যা করা হবে। তাই তিনি দেশে ফিরতে চান না। তার দাবি, তিনি ইরান সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাই তার কণ্ঠকে বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করছে ইরান। তিনি ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত মিস ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন ফিলিপাইনে।

গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে ফিলিপাইনের অভিবাসন বিভাগ বলেছে, জারা বাহারিকে গ্রেপ্তারে বিশ্বব্যাপী লাল নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশি এজেন্সি ইন্টারপোল। তবে কোন দেশের পক্ষে ওই নোটিশ জারি করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে জারা বাহারি বলেছেন, অভিবাসন বিষয়ক একজন কর্মকর্তা তাকে বলেছেন যে, ২০১৮ সালে ইরান এমন অনুরোধ করেছিল। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।

জারা বাহারি ফোনে সিএনএন’কে বলেছেন, আমি ২০১৪ সাল থেকে ফিলিপাইনে বসবাস করছি। তারপর থেকে আমি কখনো ইরানে ফিরে যাইনি। বহুবার ব্যাখ্যা করেছি, কীভাবে আমার বিরুদ্ধে ইরানে ফৌজদারি মামলা হতে পারে, যখন আমি ফিলিপাইনে অবস্থান করছি। ১২ দিন আগে তিনি দুবাই থেকে ফিরেছেন ম্যানিলায়। তারপর থেকে সেখানকার নিনয় অ্যাকুইনো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের তিন নম্বর টার্মিনালে একটি প্যাসেঞ্জার রুমে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

আরো পড়ুন :

যেসকল নারী ও পুরুষের সঙ্গে বিয়ে বৈধ নয়
কাজের চাপ নিতে রাজি নন প্রিয়াংকা
১২ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন ব্রিটেনে

বলেছেন, আমি আসলেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এর ওপর তার অনিশ্চিত ভাগ্য সেই অসুস্থতাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার দাবি, নির্বাসিত ইরানের নেতা রেজা পাহলভিকে সমর্থন করার কারণে তাকে টার্গেট করেছে ইরান। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত হন রেজা শাহ পাহলভি। জারা বাহারি বলেন, তিনি সম্প্রতি এক প্রতিযোগিতায় পাহলভির ছবি ও ইরানের সাবেক রাজার পতাকার ছবি ব্যবহার করেছিলেন। এ জন্য ইরান কর্তৃপক্ষ তাকে টার্গেট করেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইরানের মানুষের কণ্ঠস্বরকে আমি প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি এর মধ্যদিয়ে। এ ছাড়া তিনি ইরানে সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। এ জন্যও তাকে টার্গেট করা হয়ে থাকতে পারে। ইরানে তিনি একজন শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি মেয়েদের শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। তাদেরকে শিখাতে চেয়েছিলেন যে, তারা কোনো জিনিস নয়। তারা খেলনা নয়। তারা মানুষ। তাদেরও ছেলেদের মতো সমান অধিকার আছে।

এ বিষয়ে ফিলিপাইনের অভিবাসন বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সিএনএনের সাংবাদিক। কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। একই প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে ম্যানিলায় ইরান দূতাবাস ও ইরান সরকারের পক্ষ থেকে।

৩০, অক্টোবর,  ২০১৯  at ০১:৩০:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/মাজ/এজে