সমাজের অধঃপতন, ধর্ষণ আজ শিল্পে পরিনত হয়েছে

সমাজের বিবেক আজ অন্ধ। বিচার ব্যবস্থা টাকার কাছে হার মানছে। কম বেশি সবাই জানেন ব্লেড দিয়ে কেটে যৌনাঙ্গের প্রবেশ
পথ বড় করেই রাতভর ধর্ষন করেছে দিনাজপুরের ৫ বছরের শিশু পূজাকে।সারারাত ধরে ২ টা জানোয়ার টানা ধর্ষন করে সকালে বাড়ির কাছে ফেলে রেখে গিয়েছিলো তার ।

বিচার হয়নি, বাকিটা ইতিহাস……আশেপাশে রেল লাইন থাকলে হয়তো পূজার বাবাও মেয়েকে নিয়ে সেদিন আত্মহত্যা করতো আচ্ছা…ছোট্ট ফাতেমার কি দোষ ছিলো?

একটি ছোট শিশুকে তুলে নিয়ে গেল, ধর্ষন করলোবাবা বিচার চাইতে গেল থানায়, ১০০০ টাকার পুলিশ কিনতে চাইলো ফাতেমার হারানো ইজ্জত!আমি মনে করি রমজান আলী তার মেয়ে ফাতেমাকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে ভালোই করেছে কারন যেই পুলিশের কাছে সে বিচার চাইতে গেছে সে পুলিশ-ই তার দুইদিন পর এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাতভর ধর্ষন করেছেরএটি দেখলে রমজান আলী হয়তো দুইবার আত্মহত্যা করতো।

অবশ্য মেয়েটি এখনো আত্মহত্যা করেনি, ঢামেকে ভর্তি আছেরমজান আলী থানা থেকে গিয়েছিলো ক্ষমতাসীন দলের অফিসে বিচার চাইতে কিন্তু সে হয়তো জানতো না, তার ঠিক ১ সপ্তাহ আগেই মুন্সীগঞ্জে এই ক্ষমতাশীল দলেরই এক মেম্বার VGF কার্ডের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষন করেছে ফাতেমার বয়সী আরেকটি বাচ্চাকে।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় এখনো প্রচন্ড যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে শিশুটি খবর নিয়ে দেখতে পারেন ।এটা জানতে পারলে হয়তো রমজান আলী আরো একবার সুইসাইড করতেন। অতি দুঃখে রমজান আলী আজ ইতিহাস হবার পথে……গত দিনের কাহিনী তো বলাই হয়নি আপনাদের!

রাজধানীর জুরাইনে ১১ বছরের একটি মেয়েকে স্কুল কক্ষে আটকে রেখে ৮ জন মিলে রাতভর ধর্ষন করেছে মেয়েটির আত্মচিৎকার ৪ দেয়ালের বাইরে আসেনি ভালোই হয়েছে।বাইরে এলে রাষ্ট্র হয়তো তার সেই চিৎকার শুনেও হাততালি-ই দিতো ।

আপনারা কি ওই কাহিনীও ভুলে গেছেন? বাসায় মা-মেয়েকে একা পেয়ে কিছু জানোয়ার বাসায় ঢুকে মা’কে বেঁধে রেখে ৭ বছরের ছোট্ট মেয়েটিকে ধর্ষন করেছিলো নিরুপায় মা বারবার চিৎকার করে বলেছিলো, ‘বাবারা, ও ছোট, এক জন একজন করে যাও’ (ইশশশ) কেউই শুনেনি মায়ের আর্তনাদ বিচার হয়নি……হয়েছে ইতিহাস…..কিন্তু এভাবে আর কত?আর কত পূজা কিংবা ফাতেমারা ইতিহাস হবে?

৮০ বছরের বৃদ্ধাও যখন একটি রাষ্ট্রে ধর্ষনের শিকার হয়, তখন এই লজ্জা কোথায় রাখি!ফেভিকলের আঠাযুক্ত নরম গদির মানুষেরা মানবতাবাদী, প্রগতিশীল, সভ্য মানুষ। তাই তারা এসব আধুনিক সমাজের সামান্য দুষ্টামি বলে চালিয়ে দেয়।সুশীলেরাও আজ চুপ, চেতনাধারী অচেতনরা আজ অন্ধ।
আরো পড়ুন:

জে এস সি পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরন ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করেছে উপজেলা ছাএলীগ।
মেয়েকে ইভটিজিং: বিচার চাওয়ায় বাবাকে মারপিট, প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ
লোহাগাড়ার ফেসবুক আইডিগুলো নজরে রাখা হচ্ছে। গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নিবে পুলিশ

 মানবতাবাদী মুক্তমনারা আজ বোবা,সমাজ ধংস হোক,নারী লাঞ্চিত হোক, শিশু ধর্ষিত হোক, রেল লাইনে কাটা পড়ে মরুক,তাতে তথাকথিত সুশীল চেতনাধারী মানবতাবাদীদের যেন কিছুই যায় আসে না!

আর আমরাও ফেসবুকের প্রোফাইলে ২ দিন কালো ছবি ঝুলাই কিংবা ‘Justice for অমুক, তমুক’ লিখে পোস্ট করি…..ব্যাস, তারপর সব ভুলে যাই! এভাবে আর কত!
রমজান আলী তো ফাতেমাকে নিয়ে মরে গিয়ে বাঁচলো, আমরা বেঁচে আছি কেন?মানুষ বেঁচে আছে কেন?এভাবে বেঁচে থাকাকে কি বেঁচে থাকা বলে?মানুষ কি এভাবে বেঁচে থাকে?একের পর এক আমাদেরই নাকের ডগার ওপর দিয়ে এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে শত শত ছোট্ট পূজা কিংবা ফাতেমারা আমরা মরি না কেন?আমাদেরও মরে যাওয়াই উচিত!

এসব প্রতিরোধ/প্রতিকার করতে না পারলে আমাদের মরে যাওয়াই উচিত!বেঁচে থাকার অন্তত কোনো অধিকার আমাদের নেই।প্রতিটা দিন, প্রতিটা ক্ষেত্রে হতাশার সংবাদ!বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখন স্বাভাবিক শব্দটির থেকেও বেশি অস্বাভাবিক হয়ে গেছে৷

অন্যায়ের প্রতিবাদ না করা একটা মেরুদন্ডহীন জাতিতে আমরা দিন দিন অভূতপূর্ব সাফল্য দেখাচ্ছি!!এদেশে…..সাঁওতাল ধর্ষিতা হলে সিনেমা হয়পাহাড়ি ধর্ষিতা হলে আন্দোলন হয় সংখ্যালঘু ধর্ষিতা হলে তুফান ওঠে মানবতাকর্মীদের ঠোঁটে নায়ক-নায়িকা কেলেঙ্কারিতে মিডিয়ায় চলে তোলপাড় আর ফাতেমারা কচি বয়সে ধর্ষিতা হয়ে ঝরে যায়।

হযরত আলীর ন্যায় বিচারের অভাবে প্রাণ দেয় রেল লাইনে,বিচারের বাণী এদেশে যেন নিভৃতে কাঁদে।ধর্ষক জন্মদাতা এই সমাজের ধ্বংস চাই, পরিবর্তন চাই।তবে বর্তমানে যে ভাবে ক্লিন অভিযান চলছে এটা অব্যহত থাকলে সমাজের বিবেক ফিরে আসবে। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় হারানো বিবেক ফিরিয়ে নিয়ে আসার।

অক্টোবর ২৫, ২০১৯ at ১২:০৮:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/দেপ্র/তআ/ওআ