উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জীবনযাপন

প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার পারদ। রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ মিলিমিটারের বেশি হয় তাহলে তাকে ‘উচ্চ রক্তচাপ’ বলা যায়। বয়স বৃদ্ধি উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম ঝুঁকি।

তবে যাঁদের ওজন বেশি, যাঁদের হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার অভ্যাস কম, যাঁরা চর্বিজাতীয় খাবার ও লবণ বেশি খান, ধূমপান করেন, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পারিবারিক ইতিহাসও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে উচ্চ রক্তচাপ থাকার কারণে স্ট্রোক, কিডনি বিকল, চোখের ক্ষতি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করতে হয়। তবে ওষুধ সেবনই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় নয়। জীবনযাপনের ধরনও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের রোগী হন তবে এখন থেকেই জীবনাচরণে কিছু পরিবর্তন আনুন।

নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তেল-চর্বিজাতীয় খাবার কম খান, ফলমূল আর শাকসবজি রক্তচাপ কমাতে কার্যকর।

বাড়তি ওজন কমান: শরীরের ওজন রাখুন স্বাভাবিক। আদর্শ বিএমআই হচ্ছে ১৮.৫ থেকে ২৪.৯–এর মধ্যে। নিজের উচ্চতার বর্গকে (মিটারে) শরীরের ওজন দিয়ে ভাগ করলেই পেয়ে যাবেন বিএমআই। এক কেজি ওজন কমালে রক্তচাপ কমতে পারে ১ মিলিমিটার পারদ।

আরও পড়ুন:
বেধড়ক মারধরের পর র‌্যাবসহ ৫ জনকে অবশেষে ফেরত দিল বি এসএফ !
আন্দোলনের নামে দেশে চলছে অস্থিতিশীলতা

নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে পারে প্রায় ৫ থেকে ৮ মিলিমিটার। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং—এ সব ব্যায়ামই কার্যকর। একসঙ্গে ৩০ মিনিট করতে না পারলে দশ মিনিট, দশ মিনিট করে দিনে তিনবার হাঁটলেও উপকার পাওয়া যাবে।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন: ফলমূল আর শাকসবজি খান বেশি বেশি। তেল-চর্বিজাতীয় খাবার খান কম। ফলমূল আর শাকসবজিতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম। পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে কার্যকর। লবণ খাবেন পরিমিত। তরকারিতে দেওয়া লবণই যথেষ্ট। পাতে বাড়তি লবণ নেওয়া পরিহার করুন। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন লবণাক্ত মাছ, চিপস, ক্র্যাকার্স, নোনতা বিস্কুট ইত্যাদি কমান। বরই, তেঁতুল, পেয়ারা, আমড়া, সালাদও কাঁচা লবণ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।

ধূমপান বর্জন করুন: ধূমপানে রক্তচাপ বাড়ে। পরোক্ষ ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হতে পারে। সুতরাং ধূমপান বর্জন করুন।

নিয়মিত চেকআপ করান: রক্তচাপ নিয়মিতভাবে মেপে দেখুন। উচ্চ রক্তচাপের কোনো উপসর্গ নেই। তাই নিয়মিত পরিমাপ করার কোনো বিকল্প নেই।

নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রক্তচাপের ওষুধ বাদ দেবেন না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে বা কম থাকলে ওষুধ খেতে হবে না এমন ধারণা ভুল। নিজে নিজে ওষুধের মাত্রাও পরিবর্তন করবেন না। অমুকে ওই ওষুধ খান, তাই বলে সেটা আপনিও খাবেন তা ঠিক নয়। চিকিৎসক প্রতিটি রোগীর প্রয়োজন ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে ওষুধ দিয়ে থাকেন।

অক্টোবর ১০, ২০১৯ at ২২:২৫:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/প্রআ/এএএম