সম্প্রতি সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে জলদস্যু দলের কর্মকাণ্ড থেমে নেই। মাঝে মধ্যেই জেলে-বাওয়ালিদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে দস্যুরা।
গত বৃহস্পতিবারও (২৬ সেপ্টেম্বর) অপহরণের শিকার তিন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় দুই অপহরণকারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড।
জানা যায়, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পরও র্যাব ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন দস্যু নিহত হয়েছে। এর পরও নতুন বাহিনীর আত্মপ্রকাশ ঘটায় থামছে না দস্যুতা। গত ৮, ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছি ও দোবেকি এলাকা থেকে অন্তত ১৪ জেলেকে অপহরণ করে বনদস্যু আমিরুল বাহিনী। এসব জেলেরা সুন্দরবনে মাছ আহরণ করতে গেলে অপহরণের শিকার হন।
র্যাব-৮ সূত্রে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে টিকতে না পেরে একাধিক দস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। কেউ কেউ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৬ সালের ৩১ মে বনদস্যু মাস্টারবাহিনীর ১০ জন সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
এসময় তারা ৫২টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও ৫শ’ রাউন্ড গুলি জমা দেয়। এ পর্যন্ত ৩২টি দস্যুবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। ধারণা করা হচ্ছিল, সুন্দরবনে আর কোনও দস্যু নেই। কিন্তু সম্প্রতি আবারও তাদের অপতৎপরতা শুরু হয়েছে। এতে নতুন করে ভীতি দেখা দিয়েছে জেলে-মহাজনদের মাঝে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবন উপকূলের কয়েকজন জেলে জানান, গত দেড়-দুই মাসের মধ্যে দস্যুরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ৫০ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
সম্প্রতি সুন্দরবন পরিদর্শনে এসে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান, এখনও যেসব দস্যু বাহিনী আছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় অনা হবে। কিন্তু দস্যুরা বসে নেই। নিয়তই তরা মুক্তিপণ আদায়ে জেলেদের অপহরণ করে চলেছে।
এদের মধ্যে রফিক, আমিনুল, জিয়া, রবিউল ও জোনাব বাহিনী অন্যতম। বনদস্যু রফিক ছাড়া বাকি সবার বাড়ি সাতক্ষীরায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদর দফতর) অপারেশন কর্মকর্তা লে. ইমতিয়াজ আলম জানান, প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করলেও এখনও কয়েকটি দল আত্মসমর্পণ করেনি। তারাই অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯ at ২০:০০:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/বাট্রি/এএএম