ইংরেজি লেখায় দক্ষতা বাড়ানোর উপায়

আপনি কি জানেন, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয় ইংরেজি ভাষার। ব্রিটিশ কাউন্সিলের তথ্য মতে, এই মুহূর্তে সারাবিশ্ব জুড়ে হয়তো দেড়শ কোটি মানুষ ইংরেজি শেখার চেষ্টা করছে। সামনের বছর নাগাদ সেই সংখ্যা দাঁড়াতে পারে দুইশ কোটিতে।

আরও পড়ুন :
রক্তে প্লাটিলেট বাড়ায় যেসব খাবার
যুক্তরাষ্ট্র তেল মজুদ রেখেছে ৬৩ কোটি ব্যারেল

ভাষা গুরু বেঞ্জামিন ড্রেয়ারের মতে, ইংরেজি ভাষার মধ্যে অনেক অনিয়মিত ব্যাপার আছে, কিন্তু সেটি মানুষজনকে এই ভাষার প্রতি আগ্রহ থেকে বিরত করতে পারেনি।

আধুনিক বিশ্বের যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইংরেজি-যা প্রকাশনা, ইন্টারনেট, বিজ্ঞান, শিল্প, অর্থ, খেলা, রাজনীতি, এমনকি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে।

ভাষা বিশেষজ্ঞ ডেভিড ক্রিস্টাল ধারণা করেন, সারা বিশ্বে প্রায় চল্লিশ কোটি মানুষের প্রধান ভাষা ইংরেজি।

এছাড়া আরো সত্তর থেকে আশি কোটি মানুষ দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ইংরেজি ব্যবহার করেন, কারণ তাদের দেশের অন্য এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ এই ভাষাটি মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়, যেমন নাইজেরিয়া বা ভারত।

আর লাখ লাখ দেশের মানুষ তাদের দেশে ব্যবহৃত না হলেও বৈদেশিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ইংরেজি ব্যবহার করেন।

সুতরাং এই ভাষাটি কীভাবে আরো ভালোভাবে লেখা যায়? সেই সমস্যার সমাধান নিয়ে এগিয়ে এসেছেন ভাষা গবেষক বেঞ্জামিন ড্রেয়ার।

ইংরেজি ভাষার তদারকি কে করে?
একটি ভাষা হিসাবে ইংরেজির কোন কর্তৃপক্ষ নেই। এটা কখনোই নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি, কেউ এর ওপর নজরদারিও করেনি।

ফরাসি, স্প্যানিশ বা বাংলা ভাষার যেমন একাডেমী রয়েছে, যারা ভাষার রীতিনীতি ঠিক করে দেন।

কিভাবে এটা উচ্চারণ করা হবে, বানান কি হবে, সেটা ঠিক করে দেন। কিন্তু ইংরেজিতে এরকম কোন তদারকি কর্তৃপক্ষ নেই, যারা ভাষাটির জন্য নির্দিষ্ট ব্যাকরণ ঠিক করে দেবেন।

এর ফলে একটি বড় সমস্যা হলো, এখানে বানানের ব্যাপারটি অনেকের জন্য আতঙ্কের হয়ে পড়ে। ইংলিশরা যেসব দেশে গেছেন, সেখান থেকে নতুন নতুন শব্দ তারা এই ভাষায় যোগ করেছেন।

তবে এর সুবিধা হলো নানা শব্দের মানিয়ে নেয়া এবং সীমাহীন শব্দের একটি ভাণ্ডার তৈরি হতে পারে।

যতক্ষণ মানুষ বুঝতে পারে, ততক্ষণ কিভাবে বোঝাচ্ছেন, তাতে কি আসে যায়?

এক কথায় বলতে গেলে, হ্যাঁ, আসে যায়।

বছরের পর বছর ধরে মানুষজনের ভেতর অনানুষ্ঠানিক ইংরেজির ব্যবহারের পরে এখন কোনটা সঠিক বা আসলে মানসম্পন্ন ইংরেজি, সেটা বলা কঠিন হতে পারে। তবে এগুলো যোগাযোগে সহায়তা তো করছেই।

কিন্তু আপনি যদি পেশাদারি কোন কাজে ইংরেজি ব্যবহার করেন, তখন সেটা পরিষ্কার আর নির্ভুল ভাবেই লেখা দরকার, বলছেন মি. ড্রায়ের।

”কারণ যখন অন্যরা সেটি পড়বে, তারা যেন তার অর্থ ঠিকভাবে বুঝতে পারে যে, আপনি কি বলতে চেয়েছেন?” তিনি বলছেন।

আর ঠিকভাবে ইংরেজি লেখার একটি সহজ ও দ্রুত উপায় হলো বানানটি ঠিকভাবে লেখা। আরেকটি বিষয় হলো, একই ধরণের উচ্চারণ হলেও যেসব শব্দের আলাদা মানে, সেদিকে সজাগ নজর রাখা। কারণ এগুলো শুনতে একই রকম হলেও তার অর্থ হয়তো অনেক আলাদা।

অনুশীলন-১: সঠিক ইংরেজি লেখা শুরু করুন
যদিও এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কোন নিয়ম নেই, তবে আপনি বেশ কিছু অর্থ এড়িয়ে চলতে পারেন, যা বেশিরভাগ মানুষের লেখায় অযথা ব্যবহার হয়ে থাকে।

যেমন এক সপ্তাহ ধরে ‘very, rather, really, quite, just,in fact এসব শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এই তালিকায় ‘actually’ শব্দটাও যোগ করতে পারেন।

মি. ড্রেয়ার বলছেন, আপনি যদি এটা করতে পারেন, তাহলে আপনার ইংরেজি লেখা অন্তত ২০ শতাংশ ভালো হয়ে যাবে।

অনুশীলন-২: কিছু নিয়মের বিষয়ের বাইরে গিয়ে ভালো করে তুলুন

ড্রেয়ারের মতে ইংরেজির ক্ষেত্রে এমন কিছু নিয়মের কথা বলা হয়, যার উৎপত্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ হতে পারে। আপনাকে এর আগে যাই বলা হোক না কেন, ভালো লেখার ক্ষেত্রে এগুলোর আসলে কোন ভূমিকা নেই।

এগুলোকে বলা যেতে পারে ‘নিয়মহীন’, যেগুলো বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময় বা বড় হয়ে ওঠার সময় নানাভাবে আমাদের মাথার ভেতর ঢুকে গেছে।
ড্রেয়ারের পরামর্শ হচ্ছে, এগুলো স্মরণে রাখুন এবং বাদ দিয়ে দিন।

”আপনাকে হয়তো বলা হয়েছে যে, and অথবা but দিয়ে বাক্য শুরু করা ঠিক নয়। অনেক সময় হয়তো এটি সত্যিই নানা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, কিন্তু এটা করাই যাবে না, এমন কোন আইন নেই।” বলছেন মি, ড্রেয়ার।

”ইংরেজি ভাষায় এমন অসংখ্য উপাদান আছে যা হয়তো কোন বাক্য শুরু করার জন্য সেরা উপায় নয়, কিন্তু সেভাবে করলে ভুলও হবে না।”

তিনি চান, বাক্যের শেষে ও, এবং- এর মতো অব্যয় দিয়ে শেষ না করার যে কথা প্রচলিত রয়েছে, মানুষ তার ভেতর থেকেও বেরিয়ে আসুক।

”কোন কোন ক্ষেত্রে হয়তো এটা ঠিক হবে না, কিন্তু আপনি যদি অব্যয়জাতীয় শব্দ দিয়ে বাক্য শেষ করেন, তাতে কোন অন্যায়ও হবে না।” বলছেন মি. ড্রেয়ার।

অনুশীলন-৩:
মি. ড্রেয়ার বলছেন, ”এই পরামর্শ আমি তাকেই দেবো যিনি ভালো লেখক হতে চান।”

”ছোট্ট একটা পরীক্ষা করে দেখুন। আপনি পছন্দ করেন এমন একটি লেখা বেছে নেন এবং সেটি প্রতিটা শব্দ আবার কপি করে লিখুন।”

ড্রেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, ”এটা আপনি হাতে লিখতে পারেন অথবা কম্পিউটারে। কিন্তু প্রিয় কোন লেখা আবার লেখার মাধ্যমে আপনি সেটার ছন্দ টের পাবেন, শব্দ বাছাই বুঝতে পারবেন, যতি চিহ্নের ব্যবহার জানবেন….আপনার আঙ্গুল এমন কিছু চমৎকার ব্যাপার তৈরি হবে, যা আপনার মস্তিষ্কেও চলে যাবে। এই ভাবে আপনি দ্রুত অনেক কিছু শিখতে পারবেন।”

”ভালো লেখার কৌশল আয়ত্ত করার জন্য এটা সহজ এবং দ্রুত একটি কৌশল।” তিনি বলছেন।

বানান পরীক্ষা এবং ব্যাকরণ সহায়তা
ড্রেয়ার বলছেন, ”ব্যাকরণ যাচাই করার জন্য যেসব সফটওয়্যার রয়েছে, সেগুলো যদি এতোই ভালো হতো, তাহলে আমি কোন চাকরি পেতাম না। কারণ বাস্তবতা হলো, সেগুলো আসলে ততটা ভালো নয়।”

কিন্তু সমস্যাটি কোথায়?
”যা করার জন্য এগুলো তৈরি করা হয়েছিল, সেটি আসলে তারা করতে পারে না। এগুলো খুব সহজ নয়। এগুলো বুঝতে পারে না, কখনো কখনো নিয়ম ভাঙ্গা হচ্ছে ব্যাকরণের পবিত্র বিধান, যা আপনি আপনার লেখায় আনতে চান।”

এমনকি বানান পরীক্ষা সফটওয়্যারের ওপরেও পুরোপুরি নির্ভর না করার পরামর্শ দিচ্ছেন ড্রেয়ার।

তবে তিনি বলছেন, তিনি সবসময়েই বানান পরীক্ষা করে থাকেন। কারণ ”আপনি যতই সতর্ক থাকুন, আরো নির্ভুল হওয়ার জন্য অন্য কিছুর সহায়তা নেয়া ভালো।”

”কিন্তু যখন একই ধরণের শব্দের অনেক মানে হয়, তখন এসব বানান পরীক্ষার সফটওয়্যার কোন কাজে আসে না।’

সেপ্টেম্বর১৯, ২০১৯ at ০৯:৫৯:২৬(GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/আস/ইআ