শরণখোলায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের শরণখোলায় কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এছাড়া ১০০ পুকুর ও মাছের ঘের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৬৮৬ হেক্টর আমনের বীজতলার মধ্যে কিছু বীজতলা পানিতে আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামীম বিষয়টি সরেজমিনে দেখার জন্য ৭ আগষ্ট দুপুরে উপজেলা সদর রায়েন্দা ইউনিয়নের পুরাতন পোস্ট অফিস থেকে উত্তর কদমতলা হল মাদ্রাসা পর্যন্ত পরিদর্শন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষনে উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার সংলগ্ন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় দেড় শতাধিক ও শহীদ মিনার এলাকার পুরাতন পোষ্ট অফিস থেকে হল মাদ্রাসা পর্যন্ত সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যরা গৃহবন্ধী হয়ে আছে।

আরো পড়ুন :

> কেশবপুরে সরকারী কালভাট বন্ধ করে মাছের ঘের, পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ
> নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে উপকৃলসহ পাইকগাছায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ

এবং জনজীবনে কিছুটা দূর্ভোগ নেমে এসেছে। এছাড়া শরণখোলা উপজেলার ১০/১২ হাজার পুকুর ও ঘেরের মধ্যে ১০০ টি পুকুর ও ঘের এবং ৬৮৬ হেক্টর বীজতলার মধ্যে কিছু বীজতলা আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে।

উত্তর কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. মনির জোমাদ্দার, খালেক মাঝি, মৎস্য ব্যবসায়ী খোকন, খাদিজা বেগম, হোসনেয়ারা বেগম বলেন, বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে ভারী বৃষ্টিতে পানি বেড়ে ঘর-বাড়ি, রান্নাঘর, টয়লেটগুলো তলিয়ে গেছে। রান্না-বান্না, গোসল করতে পারছি না। তারা এ দূরঅবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কৃষ্ণ বলেন, শরণখোলায় ১০/১১ হাজার ঘের ও পুকুরের মধ্যে বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক পুকুর ও ঘের আংশিক তলিয়ে গেছে। এতে পুকুর ও ঘের মালিকদের প্রায় ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।

অপরদিকে উপজেলা কৃসি কর্মূকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, শরণখোলায় ৬৮৬ হেক্টর বীজতলা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বীজতলা তলিয়ে যাবার উপক্রম হলেও পানি নিষ্কাষনের গেটগুলো খুলে দেয়ায় ক্ষতির সম্ভাবনা খুবই কম বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রায়েন্দা এলাকার সমাজ সেবক তাইজুল ইসলাম মিরাজ জানান, জীবন জীবিকার তাগিদে পানিতে আটকে পড়া পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যরা সারাদিন বাইরে থাকলেও নারী ও শিশুরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। রায়েন্দা খালের পাশ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়িবাঁধ রয়েছে। কিন্তু বেড়ী বাধে যে সকল সুইজ গেইট রয়েছে তা পানি নিষ্কাশনের জন্য তেমন উপযোগী নয়, তাই এলাকাবাসী এই জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে।

শরণখোলা উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম শামীম জানান, তিনি জলাবদ্ধ একটি এলাকা পরিদর্শণ করেছেন এবং অন্যান্য যায়গারও খোঁজখবর নিচ্ছেন। সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিবেন বলে এলাকাবাসীকে আস্বস্থ করেছেন।

আগস্ট ০৮, ২০২৩ at ১৯:২৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর