যশোরের পদ্মা নার্সিংহোমে রোগীর মৃত্যু : স্বাস্থ্য বিভাগের নিরবতা!

ফাইল ছবি।

যশোর পদ্মা নার্সিং হোমে অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসা না পেয়ে রাজিয়া বেগম(৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যু ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রতিষ্ঠানটি একজন প্রভাবশালী চিকিৎসকের হওয়ার কারনে তদন্ত কমিটি গঠন করেননি। স্বাস্থ্য বিভাগের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার  ফলে রোগীর স্বজনদের মধ্যে ক্ষেভের সৃষ্ঠি হয়েছে। মৃত রাজিয়া বেগম যশোর বেনাপোল কলেজ পাড়া এলাকার ফকির আহম্মেদের স্ত্রী।

উল্লেখ্য গে গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর পদ্মা নার্সিং হোমে অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসা না পেয়ে রাজিয়া বেগম(৭০) নামে এক এক রোগীর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যু হয়েছে। শিরোনামে দৈনিক সমাজের কথায়সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে শহরময় আলোচনার ঝড় ওঠে। অভিযোগ ওঠে প্রতিষ্ঠানটি একজন প্রভাবশারী গাইনী ডাক্তারের তিনি তার মত করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। তিনি রোগীকে অজ্ঞান করে অপারেশন করেন।

আরো পড়ুন :

> বৃহস্পতিবার রাতে হতে পারে দুই আসামির ফাঁসি, প্রস্তুত ৮ জল্লাদ
> সিমানার দেওয়াল ভেঙ্গে নেওয়ার অভিযোগ, জমি মাদ্রাসার বলে দাবী ফয়জুল্লাহ’র

মৃত রাজিয়া বেগমের ছেলে জুলফিকার আলী অভিযোগ করে বলেন, সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তার মা ব্যাথার যন্ত্রণায় ছটপট করতে থাকেন। এ সময় বোন ও দুলাভাই শহিদুল ইসলাম দ্রুত সেবিকাদের ডাকেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেননি। এভাবে সারা রাত ছটপট করতে করতে ভোরে দিকে মায়ের শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়। তিনি আরও জানান যন্ত্রণা সহয্য করতে না পেরে রাতে কোন এক সময় তার মা স্টোক করেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকে ডাক্তার আসলে দ্রুত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রেফার করেন।

পরে স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার মাকে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। সেখানে কতব্যরত চিকিৎসক রোগীকে দেখে বলেন অনেক আগে রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। দ্রুত আইসিইউতে নিতে হবে। তখন স্বজনরা দ্রুত হাসপাতালের আইসিইউতে নিলে ডাক্তার আশরাফ হোসেন মা রাজিয়া বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে মঙ্গলবার শহরের বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে শহর ময় আলোচনার ঝড় ওঠে। কেউ বলেন স্বাস্থ বিধি না মেনে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। আবার কেউ বলেন, প্রভাবশালী চিকিৎসকের প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। ফলে প্রায় প্রতিষ্ঠানে রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনা আড়াল করতে রোগীকে হাসপাতালে রেফার করে কৌশলে নিজেরা রক্ষা পান।

এ ব্যাপারে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসসহ একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এবং ঘটনার বিবরণ শোনেন। পরবর্তীতে সিভিল সার্জন তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারেন। এতে দোষি প্রমানিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, রোগীর স্বজনরা লিখিত কোন অভিযোগ প্রদান করেননি। শুধুমাত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়াই প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করা হয়। ক্লিনিকের ম্যানেজার রুহুল কুদ্দুসসহ অন্যান্যরা জানান, রাজিয়া বেগমের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কোন অবহেলা করা হয়নি। তিনি আরও জানান অপারেশনের ৮ঘণ্টা পরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে সোমবার সকালে মারা যান বলে জানতে পারি।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি দ্রুত গঠন করা হবে। রোগীর স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করেন কি না সে জন্য অপেক্ষায় একটু বিলম্ব হচ্ছে। তা না হলে পত্রিকায়র সংবাদের আলোকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

জুলাই ২৬, ২০২৩ at ২০:৫৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর