গাজীপুরে শ্রমিকদের উপর পুলিশের গুলি টিয়ারশেল নিক্ষেপ, গুলিবিদ্ধ ৬, আহত অন্তত ২০ জন

গাজীপুরের টঙ্গীতে সাতাইশ এলাকায় প্রিন্স জ্যাকার্ড স্যুয়েটার নামক পোশাক কারখানায় তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর গুলিবর্ষণ, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে ৬ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টায় টঙ্গীর সাতাইশ এলাকার বাগানবাড়ি রোডে প্রিন্স জ্যাকার্ড স্যুয়েটার কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আরো পড়ুন :

> মেয়র হিসেবে হ্যাটট্রিক রাজশাহীর লিটনের
> নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ফেন‌সি‌ডিলসহ একজন আটক

এঘটনার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, এই কারখানায় প্রায় এক হাজার শ্রমিক রয়েছেন। মালিকপক্ষ তাদের তিন মাসের বকেয়া বেতন দিচ্ছে না। এই বকেয়া বেতনের দাবিতে তারা গতকাল রাতে দাবি জানিয়েছিল। বুধবার সকাল ১০টার দিকে সকল শ্রমিকরা কারখানায় এলে গেটে তালা দেখতে পায়। এতে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশি বাধায় ব্যর্থ হন। এরপর তারা রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এছাড়াও পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কমপক্ষে ছয়জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ ও ২০ জন আহত হন। আহতদের নিকটবর্তী গুটিয়া ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হওয়া শ্রমিকরা হলেন, সুপাভাইজার ফরহাদ, অপারেটর জাহাঙ্গীর হোসেন, শাহাদৎ হোসেন, মাসুদ। লঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসে আহত শ্রমিকদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন সাকিব, স্বপন, লাদেন ইব্রাহিম, জাহাঙ্গীর আলম, জোবায়ের, মেহেদী।

আন্দোলরত শ্রমিকরা জানান, তিন মাস ধরে বেতন দেয় না। আমরা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ গুলি করেছে। বেতন না পাওয়ায় বাড়িওয়ালার চাপ, খাবার দাবারের সমস্যা ও অফিসে যাতায়াতের সমস্য হচ্ছে।

আহত শ্রমিক মাসুদ মিয়া বলেন, পুলিশের টিয়ারশেলে আমি আহত হয়েছি। বেতন চাই, বিচার চাই।

অপারেটর সোহাগ মিয়া বলেন, আমার ভাই সুপারভাইজার ফরহাদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বেতন চাওয়ার কারণে গুলিবিদ্ধ হয়েছি আমরা। আমরা বেতন চাই, নির্যাতনের বিচার চাই। ঈদের আগে সকল বকেয়া পরিশোধ চাই।

এ বিষয়ে জানতে গেলে প্রিন্স জ্যাকার্ড স্যুয়েটারের গেটে গেলে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। নিরাপত্তাকর্মী সন্তোষ জানান, ভেতরে কেউ নেই। স্যারেরা চলে গেছেন।

ঘটনাস্থলে থাকা শিল্পপুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোশারফ হোসেন বলেন, গুলি করা হয়নি। সাউন্ড গ্র্যানেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছে। এখন ফোনে ফোনে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

জুন ২১, ২০২৩ at ২১:১৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/শেরাহা/ইর