সাতক্ষীরায় চলছে শিখো-প্রথম আলো কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা

সকাল আটটা বাজার আগেই শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ। তাদের হইহুল্লোড়ে পুরো বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেতে ওটে উৎসবের আমেজ। সবার হাতে কৃতিত্বের সনদ আর ক্রেস্ট। সেগুলো নিয়েই তুলছে ছবি। ছোট ছোট দলে চলছে আড্ডা। স্কুলজীবনের কাছের বন্ধু ও সহপাঠীকে কয়েক মাস পরে দেখে জড়িয়ে ধরছে কেউ কেউ। আবার মুঠোফোনে সেলফি তুলে স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করছে অনেকেই। নির্দিষ্ট বুথের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করছিল সকালের নাশতা।

আজ শনিবার সকালে এই চিত্র দেখা গেল সাতক্ষীরা অনুষ্ঠিত শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। সংবর্ধনায় অংশ নিতে অনলাইনে নিজেদের নাম আগেই নিবন্ধন করেছিল প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের ৬৪ জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

সকাল ৯.৩০ এ সাতক্ষীরা প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। এতে গলা মেলান শিক্ষার্থী ও অতিথিরা। সাতক্ষীরা বন্ধুসভার সদস্যপদ শরিফ হাসান ও মৌটুসী চ্যাটার্জীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা বন্ধু সভার সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস কেডি এবং প্রথম আলোর সাতক্ষীরা নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানাঞ্জী।

অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা জোগাতে এরই মধ্যে সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির, বিশেষ অতিথি সাতক্ষীরা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বাসুদেব বসু, বিশিষ্ট সমাজসেবক আবুল কালাম বাবলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাস বসু, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপ্পী, বিটিভির কণ্ঠ শিল্পী রোজ বাবু প্রমুখ।

আরো পড়ুন :
>চিলমারীতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ
>আজ পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসেছে মো. মাসুদ রানা। ভীষণ উচ্ছ্বাস নিয়ে সে বলল, ‘এখানে আসব বলে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছি। কখন আসব এখানে, সবার সঙ্গে দেখা হবে, সেই অপেক্ষা অবশেষে ফুরাল। আমাদের সবাইকে যেভাবে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, সেটি অকল্পনীয়।’

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ টাউন শ্রীপুর শরৎচ্চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছাবিকুন নাহার আঁখি, মার্জিয়া সুলতানা, জান্নাতুল ফেরদৌসি তিনজন ছবি তুলছিল। তারা বলছিল, ফলাফল প্রকাশের দিন জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর পাওয়ার পর যেমন আনন্দ পেয়েছিল, এ অনুষ্ঠানে এসেও তেমন অনুভূতি হয়েছে তাদের। অনেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হচ্ছে এ জন্য আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়েছে।

জিপিএ-৫ পাওয়া ছেলে মো. আসাদুল্লাহ নিয়ে তালা উপজেলার নিম্ন এলাকা থেকে অনুষ্ঠানে এসেছেন আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজনে এসে তাঁরও ভালো লাগছে। এখানে এসে বাচ্চারা আরও ভালো করার উৎসাহ পাবে।

মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই আসাদুল্লাহ বলে ওঠে, ‘অনেক জায়গায় কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছিল। কখন সাতক্ষীরায় হবে, সেই অপেক্ষায় ছিলাম। বেশ ভালো লাগছে এই আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে। এখানে এসে অনেক বড় মানুষের সঙ্গে মেশারও সুযোগ হয়েছে।’

ফেব্রুয়ারি ২৫.২০২৩ at ১২:২১:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মরঅ/এমএইচ