ঋন নিয়েছে ৪৫ হাজার নোটিশে ৭৫ হাজার! 

২০১৭ সালে কৃষক মহিউদ্দীন ঋন নিয়েছিলেন ৪৫ হাজার টাকা। গত বছরের ৭ নভেম্বর ঝিনাইদহ কৃষি ব্যাংক থেকে নোটিশ আসে ৭৫ হাজারের। অনেকের ঋন না জানিয়ে আবার রিকোভারি দেখিয়ে নতুন ঋন তোলা হয়েছে। এ ভাবেই কৃষি ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখা থেকে ঋণ নিয়ে গ্যাড়াকলে পড়েছেন সদর উপজেলার গান্না এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক। ২০১৭ সালের আগে যারা এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে তাদের না জানিয়ে রিকোভারি দেখানো হয়েছে।

তখন কৃষকরা যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিলেন, বর্তমানে তাদের বাড়িতে পাঠানো ঋণ খেলাপির নোটিশের সাথে কোন মিল নেই। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ঋণ গ্রহীতাদের বাড়িতে চুড়ান্ত নোটিশ পাঠায় ঝিনাইদহ কৃষি ব্যাংক। বিশেষ করে গান্না-মহারাজপুর এলাকার ঋণ গ্রহীতাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চান্দেরপোল গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মহিউদ্দিন ২০১৭ সালে কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছিলেন ৪৫ হাজার টাকা।

গত ৭ ডিসেম্বর ব্যাংক থেকে ইস্যু করা নোটিশে ঋণের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭৫ জাহার টাকা। যা পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯। এই তারিখের মধ্যে পরিশোধ না করায় বর্তমানে সুদ-আসলে তার পরিশোধিত টাকার পরিমাণ দেখানো হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৭৪৩ টাকা। চান্দেরপোল গ্রামের নবীছদ্দিনের ছেলে ইদবার আলী ২০১০ সালে ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। বর্তমানে তার সুদ-আসলে টাকার পরিমাণ দাড়িয়েছে ৫৫ হাজারে।

চান্দেরপোল গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে তাজ উদ্দীন, ছানারদ্দিন বিশ^াসের ছেলে হেলাল উদ্দিন, জলিল মন্ডলের ছেলে আলম হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে তবিবার ও তাইজেলসহ গান্না ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ঋণ গ্রহীতাদের ঋনের সঙ্গে নোটিশের কোন মিল নেই। কৃষক তাজ উদ্দীন ও মহি উদ্দীনের ব্যাংকে ঋণের কাগজ পত্রে দেখা যায়, তাদের ঋণ ২০১৮ সালে রিকোভারি করা হয়েছে। কিন্তু এই রিকভারির খবর তাদের জানা নেই। তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার ও মতিয়ার রহমান এই টাকা রিকোভারি দেখান।

আরো পড়ুন:
>চৌগাছায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
>সপ্তদ্বীপার সাহিত্য আসর ও আলোচনা সভা
>পাইকগাছায় স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসীর স্মারকলিপি প্রদান

অভিযোগ উঠেছে রিকোভারির সময় ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে সেই টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার অবসরে চলে গেছেন। মতিয়ার রহমান করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বর্তমানে এই এলাকায় তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এহিয়া নামের আরেক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আগের তদন্ত কর্মকর্তা কি করেছেন আমি বলতে পারবো না।

কাগজপত্রে যে টাকা রয়েছে সেটায় গ্রহীতাকে দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থাপক শাহাবুদ্দীন বলেন, নোটিশে মামলার খরচ, আসল ঋণ, সুদের পরিমাণ, প্রচারণার খরচ যোগ করে পাঠানো হয়েছে। মামলার আগেই পরিশোধ করলে মামলার খরচ ও প্রচারণার খরচ বাদে শুধু সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

জানুয়ারি ০৬.২০২৩ at ২০:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর