প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পাইকগাছায় অবাধে চলছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরী

খুলনার পাইকগাছায় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে চলছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর কারখানা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পরেও যেন নড়েচড়ে বসেছে কয়লা কারখানার মালিকরা। অবৈধ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর চুল্লি গগে ওঠায় পরিবেশ বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে গত ২৫/২৬ ফেব্রুয়ারী গনমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।খবর প্রকাশে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসন পরিবেশ সুরক্ষায় উপজেলার চাঁদখালী অবৈধ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর কারখানা বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

অবৈধ চুল্লি ধ্বংস বা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রট মো. আসিফুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম।এসময়ে ৬৯টি চুল্লির মধ্যে স্কেভেটর দিয়ে ৫টি ধ্বংস করা হয়েছিলো। বাকী কয়লা চুল্লি গুলো বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। মানবিক কারনে ১ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ ও অপসারণ করার শর্তে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু শাহাজাদা ইলিয়াস সুপারিশ করায় কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেন।এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও বন্ধ হয়নি কয়লার চুল্লি, আবারও নড়েচড়ে বসেছেন মালিকপক্ষ।

জানাযায়,একটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মন পর্যন্ত কাঠ পোড়ানো হয়। প্রতিবার কমপক্ষে ২৫ হাজার মন কাঠ পোড়ানো হয়। প্রতিমাসে প্রত্যেকটি চুল্লিতে ৩ থেকে চারবার কাঠ পুড়িয়ে কয়লা করা হয়। ফলে প্রতিমাসে কয়লার চুল্লিতে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মন কাঠ পোড়ানো হয়। ফলে ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতি সহ সামাজিক বন। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের। বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকায় বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, প্রকৃতি ধ্বংসসহ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও অদৃশ্য কারনে এতদিন কর্তৃপক্ষ্য নিরব ছিলো। অধিক লাভজনক হওয়ায় সবদিক ম্যানেজ করে এই অবৈধ ব্যবসায় নেমে পড়েছেন এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চুল্লির কারনে রাস্তা দিয়ে চলা যায় না।

আরো পড়ুন :
অবসর নিচ্ছেন না মেসি, আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে ফ্রান্সে বিক্ষোভ
কাজিপুরে আগুনে পুড়ে চারটি ঘর ভস্মীভূত

চোখ জ্বালা করতে থাকে।দম বন্ধ হয়ে আসে। এ সকল কাঠ কয়লার চুল্লির বিষাক্ত ধোঁয়ার কারনে পথচারী সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।বিশেষ করে চোখের বিভিন্ন সমস্যা সহ শ্বাসতন্ত্র জনিত সমস্যা যেন লেগেই থাকে। চুল্লি মালিকরা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।কাঠের চুল্লিতে ব্যবহার, অধিক জনসংখ্যার চাপ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বন উজাড় হচ্ছে। বনজ সম্পদ রক্ষা করা না হলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটবে, যার প্রভাব পড়বে প্রকৃতিতে। দিনের পর দিন এমনি ভাবে বনজ সম্পদ কেটে চলেছে যার কারণে পরিবেশ আজ বিপর্যয়ের মুখে।

কয়লা চুল্লির মালিক মিঠু’র কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন কোন ব্যবসা বৈধ নয় সব ব্যবসায় অবৈধ, আমরা গরীব মানুষ সামান্য ছোট পরিসরে ব্যবসা করি।আমরা কোনো শিল্পপতি না। খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (সিনিয়ার সহকারী সচিব) মোঃ আসিফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি ঐখানে নতুন করে আরো কিছু চুল্লি তৈরি হয়েছে। আমরা গতবার যখন অভিযান চালাই আমরা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম।কিছু নারীরা আমাদেরকে বাধা সৃষ্টি করেছিলো। আমারা অতিশীঘ্রই অভিযান চালাবো এবং এমন ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে যাবো, যে সবগুলো ভেঙ্গে দিতে পারবো।

আরো পড়ুন :
অবসর নিচ্ছেন না মেসি, আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে ফ্রান্সে বিক্ষোভ
কাজিপুরে আগুনে পুড়ে চারটি ঘর ভস্মীভূত

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন,৬৯ টি কাঠপুড়িয়ে কয়লা তৈরীর চুল্লির ভিতরে স্কেভেটর দিয়ে ৫টি ধ্বংস করা হয়েছিলো বাকিগুলো মানবিক দৃষ্টিতে তাদেরকে এক মাস সময় দিয়েছিলাম সমস্ত কাঠের চুল্লি অপসারণ করার জন্য কিন্তু এখনো পর্যন্ত তারা অপসারণ করেনি।আমরা ইতিমধ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি খুব দ্রুতই পূনরায় অভিযান চালাবো এবং সবগুলো চুল্লি অপসারণ করাবো।পরিবেশ অধিদপ্তর কে বার্তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছি।

ডিসেম্বর ১৯.২০২২ at ১৫:৩৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর