ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোয় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধর, বাচ্চা নষ্ট

প্রতিকি ছবি।

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে শিখা আক্তার নামের এক গর্ভবতী নারীকে মারধরের ফলে পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গর্ভপাত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে রুনা খন্দকার নামের এক প্রতিবেশী নারীর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় শিবালয় থানায় মামলা করলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বজনদের। উল্টো রুনা খন্দকারের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে মামলার বাদী শিখা আক্তারের স্বামী সুরুজ্জামান সুমনের দাবি, পুলিশ জোর করে হত্যা মামলার পরিবর্তে সাধারণ মারধরের মামলা নিয়েছে।

আর পুলিশ বলছে, মামলা যথানিয়মে নেয়া হয়েছে। তবে বাদীর কোনো অভিযোগ থাকলে তা আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার সময় তা ঠিক হয়ে যাবে। অভিযোগপত্র যদি তার মতো না হয়, তাহলে তিনি মামলা পুনঃতদন্ত চাইতে পারেন। এ বিষয় নিয়ে এখনো ওই দুই প্রতিবেশীর মধ্য চলছে উত্তেজনা।

শিখা আক্তার জানান, গত ২৫ এপ্রিল তার ছোট মেয়ে ভুল করে প্রতিবেশী রুনা খন্দকারকে তার ফেসবুক আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টকে কেন্দ্র করে রুনা ওই দিনই ঘরে কথা কাটাকাটি করে। বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সে শিখা আক্তারের মাথার চুল ধরে মারতে থাকে। বারবার পেটের বাচ্চার কথা বললেও রুনা খন্দকার মারতেই থাকে শিখাকে। পরে ঝাড়ু দিয়ে মারলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে আশপাশের মানুষ এসে তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার গর্ভপাত হয়।

আরো পড়ুন:
শিশু হত্যার দায়ে গরু থানায় বন্দি
ভারত থেকে আসা গমে পচন ধরে দুর্গন্ধ

প্রতিবেশী রাজেদা খাতুন জানান, ওই দিন রুনা খন্দকার ঘরে ঢুকেই শিখাকে ঝড়ু, বালতি দিয়ে মারধর করে। এ সময় তারা এগিয়ে এসে ফেরানোর চেষ্টা করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

শিখার স্বামী সুরুজ্জামান সুমন বলেন, ‘আমি হত্যা মামলা করি, যার আসামি রুনা খন্দকার। কিন্তু থানা থেকে তা মারধরের মামলা হিসেবে চালিয়ে দিছে। থানা পুলিশ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আসামিরা আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

রুনার চাচা লিটন খন্দকার জানান, রুনা ও তার ভাই হাসান উভয়েই এলাকার খারাপ প্রকৃতির মানুষ। মানুষকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, ‘তাদের অত্যাচারে আমরা গ্রামে থাকতে পারছি না। ফলে আমি এখন অন্যত্র বসবাস করছি।’ হাসান ও রুনা মাদকের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান লিটন খন্দকার।

এ বিষয়ে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন বলেন, ‘আমরা যথানিয়মে মামলা নিয়েছি। তবে ধারা কমবেশি হলেও তা আমরা আদালতে দাখিলের সময় দেখব। তা ছাড়া বাদী নারাজি দিতে পারবেন।’

পুলিশ প্রতারণা করে হত্যা মামলা নিয়েছে౼এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এটা করার সুযোগ নাই। কারণ, বাদীর স্বাক্ষর ছাড়া তো মামলা রেকর্ড হয়নি। আসামি যাতে পার না পায়, সে বিষয়গুলো দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

জুন ৮,২০২২ at ১৮:৫৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সনি/জআ