নকল সোনা, তক্ষক ও ম্যাগনেট প্রতারক চক্রের কাজে বাধা

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্যকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। নকল সোনা, তক্ষক ও ম্যাগনেট প্রতারক চক্রের কাজে বাধা দেওয়ায় তাঁকে এ হুমকি দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ তুলে রোববার (২৩ জানুয়ারী) বেলা ১২ টায় ওই ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য কবিতা রানার লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুরমনি গ্রামের মধুমঙ্গল বসুর ছেলে বিভাষ বসু ওরফে বৈদ্য বসু (২৮) ও চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের অক্ষয় মজুমদারের ছেলে কৃষ্ণ মজুমদার (৪০) সহ এলাকার ১০-১২ জনের একটি দল নকল সোনা, তক্ষক ও ম্যাগনেট প্রতারক চক্র গড়ে তুলেছে। বছরের পর বছর তাঁরা বাবুগঞ্জ বাজার এলাকার মুনিপাড়া ও খলিশাখালী গ্রামে এ প্রতারণামূলক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাঁরা যোগসাযোজ করে গোলাপগঞ্জ, মাদারীপুর, খুলনা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এনে ম্যাগনেট, সোনা ও তক্ষক দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা কেড়ে রাখে। এসব অবৈধ লেনদেন প্রায়ই খলিশাখালী গ্রামের কৃষ্ণ মজুমদারের বাড়ি ও বাবুগঞ্জ বাজারের মুনিপাড়ায় হয়ে থাকে।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর এলাকার লোকজনের কাছ থেকে সোনা বিক্রির কথা বলে এই চক্রের সদস্যরা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিভাষ বসু ওরফে বৈদ্য ও কৃষ্ণ মজুমদার সোনার কুলা বেচার জন্য দেন দরবার চালাচ্ছেন।

এ জন্য বিভাষ বসু প্রায়ই খলিশাখালী গ্রামে আনাগোনা করছেন। ওই মহিলা ইউপি সদস্য বিভাষ বসুকে এলাকায় অপরিচিতদের নিয়ে আনাগোনা করতে নিষেধ করেন। এ ঘটনার জের ধরে বিভাষ বসু গত ২১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ বেলা ১১.৩৫ মিনিটে এবং ২২ জানুয়ারী সকাল ৯.১১ মিনিটে একটি মুঠোফোন দিয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।

আরো পড়ুন :
এখানে পরিবারে কেউ মারা গেলে কেটে ফেলা হয় মহিলাদের আঙ্গুল
বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় মা ও মেয়ের একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা

চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য কবিতা রানা স্থানীয় সাংবাকিদের বলেন, এলাকার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে বিভাষ বসুকে এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে চলাফেরা করতে নিষেধ করেছি। এ ঘটনার জেরে সে আমাকে দেখায় দেবে, হাত পা ভেঙ্গে দেবে ও নানা ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।

বিভাষ বসু ওরফে বৈদ্য বসু নকল সোনা, তক্ষক ও ম্যাগনেট ব্যবসার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি এ প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত নেই। আমি ওই মহিলাকে কোন হুমকি-ধামকি দেইনি।

এ ব্যপারে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অহিদ বিশ্বাস, ঝর্ণা বিশ্বাস ও চেয়ারম্যান কাজী আবু শাহীন জানান, তাঁদের ইউনিয়নের বাবুগঞ্জ বাজারে নকল সোনা, তক্ষক ও ম্যাগনেটের একটি শক্তিশালী প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। দীর্ঘ ২০-২২ ধরে ওই চক্রটি সক্রিয় রয়েছে। অদৃশ্যকারনে এরা সবসময় ধরাছোয়ার বাইরে থাকে।

তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, অভিযোগপত্রটি আমি এখনো হাতে পাইনি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।

জানুয়ারি ২৩.২০২১ at ১৬:০০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সেসা/রারি