ভূরুঙ্গামারীতে সদস্য পদে ভোটের লড়াই করছেন ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার মশু

ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ভূরু ঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার শারীরিক প্রতিবন্ধী মশু।তার বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাগভান্ডার কদমতলা গ্রামে।

মশু ওই এলাকার হরমুজ আলী ও চায়না দম্পতির সন্তান। তার বাবা জীবিত থাকলেও সে পাগল প্রকৃতির।মা চায়না মশুর আট বছর বয়সেই মারা যান।চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় হচ্ছেন মোশাররফ হোসেন মশু।

জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ২০ আগষ্ট ১৯৯৫। সেই হিসেব তার বয়স ২৬ তার উচ্চতা ২৮ ইঞ্চি আর ওজন ৩৮ কেজি। সে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত লেখা পড়া করেছেন। দরিদ্রতা আর অর্থ সংকটে আর পড়া লেখা করতে পারেনি।

এখন তার ইচ্ছা জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষর সেবা করা মশু সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে ভ্যানগাড়ি প্রতীকে ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এই ওয়ার্ডে তার বিপরীতে লড়ছেন আরও পাঁচ প্রার্থী।

মশুর সাহস আর অদম্য ইচ্ছে দেখে বিস্মিত এলাকার মানুষ। স্থানীয় ভোটারো জানান, আর্থিক সংকট থাকায় ভোটাররাই ব্যানার, পোস্টার করে তার পক্ষে গণসংযোগ করছেন। তাদের আশা ভোট যুদ্ধে বিজয়ী হবেন মশু।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুর রহমান বলেন, ‘এখানে সবাই মশুর কথা বলছেন। ভোটে জিতবে কী জিতবেনা না সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু সে সাহস করে ভোট করছে এতেই আশ্চর্য হচ্ছে মানুষ।’

আরো পড়ুন :
ফুলবাড়ীতে মরিচের বাম্পার ফলন, দাম কম থাকায় হতাশ চাষিরা
কোটচাঁদপুরে সড়কে গাছ কেটে আবারো ডাকাতির চেষ্টা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পরিবহন যাত্রীরা!

৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আমজাদ বলেন, ‘মশু ছোট মানুষ। খুব সরল। ওর ভোটে দাঁড়ানো দেখে আমরাই অবাক । এই ছোট ছেলেটা তার সমর্থকদের নিয়ে পায়ে হেটেই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে।

একই এলাকার আজম আলী জানান, ‘শরীরে সমস্যা আছে কিন্তু যে কোন কাজে সে পরিশ্রমী ও খুব চেষ্টা করে। আমরা চাই মশু বিজয়ী হোক।’

’ওই এলাকার স্কুল শিক্ষক সুলতানা পারভীন বলেন, ‘মশুর ভোটে জয়ী হওয়া দরকার। মানুষের ধারণা বদলানো দরকার। প্রতিবন্ধী যে সমাজের বোঝা নয় তা করে দেখাচ্ছে মশু। মনের ইচ্ছাই বড় ইচ্ছা, সেটা সে ভোটের মাঠে দেখাচ্ছে।’

মশু বলেন, ‘জনগণ আমার সরলতা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাকে অনেকই ভালোবাসেন। আমি গরীব মানুষ।আমরা বিগত দিনগুলোতে আমাদের মত গরীব মানুষরা হক ঠিকমত বুঝে পাইনি। সেই হক বুঝে পেতেই আমার নির্বাচন করা। আমার টাকা নেই, ভোটারই টাকা খরচ করে আমার নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন।

আমি বিশ্বাস করি আমি বিজয়ী হব। আর নির্বাচিত হলে জনগনের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করব।’রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, মশু শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও নির্বাচনে তার আইনগত কোনো বাধা নেই।

জানুয়ারি ১৫.২০২১ at ১৪:৫০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নদা/রারি