প্রথমবারের মতো রাণীশংকৈলে “ব্ল্যাক রাইস’র” চাষ, ধানক্ষেত দেখতে মানুষের ভিড়

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা ‘কালো চালের ধান’ চাষ করা হয়েছে। ব্যতিক্রম এ ধানক্ষেত এক ঝলক দেখতে ভিড় করেন কৌতুহলী অনেক মানুষ। এই চালে রয়েছে ১১ টি ঔষধিগুণ, প্রচুর ভিটামিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড।

কপার, জিঙ্ক, ফাইবারের মাত্রাও বেশ। কার্বোহাইড্রেট অন্তত কম বলে ডায়াবেটিক রোগীরাও তা খেতে পারেন। চীনসহ অনেক দেশে এই চালে কিডনি, লিভারের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা হয়। তাছাড়া সাদা চাল বা পরিশোধিত ময়দার তুলনায় এটি স্থুলতা নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে। রাণীশংকৈল কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথের উদ্যোগে উপজেলার আটজন কৃষককে নিয়ে এই ধান রোপণ করেন। প্রত্যেক কৃষককে ব্ল্যাক রাইস ধানের ১ কেজি করে বীজ সংগ্রহ করে দেন।

এখন কৃষকেরা এ ধান কেটে মাড়াই এবং শুকাচ্ছেন। কালো ধানের চাষ এবং উপকারিতা শুনে অনেক কৃষকই এ ধানের বীজ সংগ্রহের জন্য ছুটছেন তাদের কাছে। রাণীশংকৈলে অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই প্রথমবার এই ব্ল্যাক রাইস ধান চাষ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জওগাঁও গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন ও জমিরুল ইসলাম, বনগাঁও গ্রামের পয়গাম আলী, আল্লামা আল ওয়াদুদ বিন নূর আলিফ এবং ধর্মগড় ইউনিয়নের ফারুক হোসেনসহ উপজেলার মোট ৮ কৃষক এ বিরল প্রজাতির মূল্যবান ধান চাষ করেছে। এ ধান সাধারণ ধানের মতো চাষ হলেও ধান চাষে অতিরিক্ত সার বা পানি ও পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। বিঘাপ্রতি জমিতে ১৭-১৮ মণ ধান ফলন হয়েছে।

আরো পড়ুন :
ঘোড়াঘাটে আমন ধান সংগ্রহের উদ্বোধন
চিতলমারীতে আমের চারা দিয়ে ২০০ শিক্ষার্থীকে বরণ

এ ধানের চাল উৎপাদন করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন রাণীশংকৈল উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক পয়গাম আলী। রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ব্ল্যাক রাইস একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান। ধানের শীষও সাধারণ ধানের চেয়ে বড়। অন্যান্য ধানের মতোই এ ধানের পরিচর্যা করতে হয়। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো। এ চালের ভাতও কালো এবং পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। ব্ল্যাক রাইস শরীরে চর্বি জমতে দেয় না ধীরে ধীরে হজম হয়। এ কারণে ক্ষুধা কম লাগে।

প্রসঙ্গত: কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ করা হচ্ছে। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্ল্যাক রাইস। কথায় আছে “পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় চীনের শাসকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘ব্ল্যাক রাইস’ গোপনে চাষ করা হতো। যা প্রজাদের জন্য চাষ করা বা খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। এ কারণে একে নিষিদ্ধ ধানও বলা হয়।”

নভেম্বর ০৭.২০২১ at ১৯:৪৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/হুক/রারি