স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরু

করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ক্লাস- পরীক্ষা শুরু হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বশরীরে ক্লাস শুরু হলেও উপস্থিতির হার তুলনামূলক কম। প্রত্যেক বিভাগে প্রবেশের পূর্বেই সকল শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা ও স্যানিটাইজার নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া শ্রেনিকক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, উপস্থিতি তুলনামূলক কম হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করতেও তেমন সমস্যা হয়নি। স্বশরীরে ক্লাস করতে পারায় শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আলভী সিদ্দীক অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, অনলাইনে অনেকের সাথে যোগাযোগ থাকলেও একসাথে বসে ক্লাস করা, সামনা-সামনি দেখা হওয়ার অনুভূতিটা অসাধারণ। বিশ্ববিদ্যালয় যেদিন বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছিলো আসলেই ভাবিনি দীর্ঘ ১৯ মাসের জন্য বন্ধ থাকবে।

সবকিছু অনলাইন হওয়াতে একটা ভয় ছিলো বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক, শিক্ষদের সাথে সম্পর্কের কোনো ব্যঘাত ঘটবে কিনা, কিন্তু পরিস্থিতি একদম আগের মতো। অনলাইনে ক্লাস করেছি, পরিক্ষা দিয়েছি কিন্তু ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস করা পরিক্ষা দেওয়ার যে অনুভূতি সেটা পাইনি এতোদিন। আশা করি এখন থেকে স্বশরীরে নিয়মিত ক্লাস করতে পারবো। আমাদের বিভাগের সব ব্যাচের স্বশরীরে ক্লাস না হলেও, পরিস্থিতি বিবেচনায় শীগ্রই সবার স্বশরীরে ক্লাস শুরু হবে।

আরো পড়ুন :
টুঙ্গিপাড়ায় জাতীয় স্যানিটেশন মাস পালিত
ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করায় যুবক গ্রেফতার

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরিদ আহমেদ জয় বলেন, অনেক দিন পর বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দেখা হয়ে একসাথে বসে ক্লাস করার অনুভূতি ১৯ মাসের সংকট ভুলিয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে একটা জড়তা দেখা দিয়েছিলো। এখন সবাই ক্যম্পাসে ফিরেছে নতুন উদ্ধমে রাজনীতি চর্চা শুরু হয়েছে। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত ক্লাস, পরিক্ষা, রাজনীতি চর্চা আমি সহ সবাই সুস্থতার সাথে চালিয়ে যেতে পারবো।

আনন্দ উচ্ছ্বাসার পাশা-পাশি বিরূপ প্রতিক্রিয়াও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদ্যমান দেখা গিয়েছে। রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু বকর আলী জানান, আমরা বন্ধুরা অনেকেই উপস্থিত থাকা স্বত্বেও আজ আমদের ক্লাস হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা ডিপার্টম্যান্টে গিয়েছি এবং ডিপার্টম্যান্টেও যথেষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। ক্লাস হয়নি তবুও অনেকদিন পরে বন্ধুদের সাথে দেখা হয়ে ভালো লাগছে। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা চান, দ্রুত তাদের তৃতীয় বর্ষের বাকী ক্লাসগুলো শেষ করে ফাইনাল পরিক্ষায় বসতে।এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চান, শতভাগ টিকা নিশ্চিত করে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম চলু করার।

অক্টোবর ২১.২০২১ at ১৮:২৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নউশ/জআ