কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধের আইন ভঙ্গ করে আবারো পশুর হাট বসেছে। উপজেলার আল্লারদর্গার নিয়মিত হাটটি শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকাল পর্যন্ত চলে। পরে খবর পেয়ে হাটের পশু কেনাবেচা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের আল্লারদর্গা পশুর হাটে শনিবার বরাবরের মতো নিয়মেই রশিদ কেটে পশু কেনাবেচা হয়। হাটে ওঠে পাঁচ শতাধিক গরু-ছাগল। করোনা স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না নিয়ম ভেঙে চালানো এই পশুর হাটে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন পশুর হাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও এখানে তা উপেক্ষা করা হয়।
সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার পশু ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা ট্রাক, নছিমন, করিমন, আলগামন, ভটভটি, স্টেয়ারিংয়ে করে পশু নিয়ে হাটে আসতে শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে হাটের কার্যক্রম শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টার দিকে।
আল্লারদর্গা পশুহাটের ইজারাদার রনি চৌধুরী হাটের কার্যক্রম চালানোর কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে নিজের দায় চাপানোর চেষ্টা করেন পশু বিক্রেতাদের ওপর। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পশু বিক্রেতারা এখানে জোর করে হাট বসিয়েছেন। হাটের বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। পরে বিষয়টি জানতে পারি। এই হাট বসাতে মাইকিং করা হয়েছে বলে অনেকে শুনতে পেয়েছেন, এমন তথ্য পাওয়া গেলেও তা অসত্য বলে দাবি করেছেন রনি চৌধুরী।
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক, হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি, এমন পরিস্থিতিতে হাট বসানোটা দুঃখজনক। আমি জানতে পাওয়া মাত্র হাটে গিয়ে সবাইকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
মাইকিং করে হাট বসানোর ঘোষণা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী বলেন, এই বিষয়টি লোকমুখে আমিও শুনেছি।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার জানান, লকডাউনে পশুর হাট বসানোর কোনো অনুমতি নেই। আল্লারদর্গা পশুহাট চলছে এমন খবর পেয়েই তাৎক্ষণিকভাবে হাটটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাটের ইজারাদারকে লকডাউনে পুনরায় হাট চালু না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে লকডাউনের বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে হাট বসানো হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও এ উপজেলায় লকডাউনে পশুর হাট চলার নজির রয়েছে। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাক্কির আহমেদ কিছুদিন আগে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মথুরাপুর পশুহাট চালিয়ে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন প্রথমে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পরে বিষয়টি অবগত হয়ে জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারকে তাৎক্ষণিক সেই হাট বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেন। হাট ইজারাদার ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সখ্য থাকলেও ইউএনও শারমিন আক্তার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে হাটটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।
জুলাই ৩১.২০২১ at ১৯:৩৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এস/জআ