লকডাউনের অজুহাতে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন

লকডাউনের অজুহাতে রাজশাহীর সবজির বাজারে ‘আগুন’ লেগেছে। একইসঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজারও অস্থির। করোনাকালে এই লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজারে খেটে খাওয়া মানুষের পকেট পুড়ছে। তবে কিছুটা অপরিবর্তিত আছে মুদি পণ্যের বাজার। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধের কারণে পণ্য সরবরাহ কম, বেড়েছে পরিবহন খরচও। আর ক্রেতারা বলছেন, এগুলো আসলে কিছুই না, সবটাই অজুহাত।

গতকাল শুক্রবার সকালে সাহেব বাজার, সাগর পাড়া (বট তলা), কেদুর মোড় বৌ বাজার, কোর্ট বাজার, খড়খড়ি বাজার, কাঁটাখালি বাজার, ও ভ্রাম্যমাণ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। কমেনি মাছের দামও।  বিক্রেতাদের দাবি, চলমান লকডাউনের কারণে পণ্য সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দামও চড়া। কাঁটাখালি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, ‘গ্রাম থেকে সবজি আসছে কম। গাড়ী কম চলছে তাই ভাড়াও বেড়েছে। তাই সবজির দাম বেশি।এমন অজুহাত অন্যান্য সবজি ব্যবসায়ীদেরও। বাদশা নামে একজন বলেন, ‘লকডাউনে আগের মত মাল পাই না। কম আসে। মাল কম থাকলে দামও বাড়ে। সাপ্লাই বেশি থাকলে দামও কম থাকতো।

তবে ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বাড়ার বিষয়টি অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কারণে-অকারণে, বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের বাড়তি মূল্য হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত লকডাউনকে অজুহাত বানিয়ে পকেট কাটছেন ব্যবসায়ীরা।
কাঁটাখালি বাজারে সবজি কিনতে আসা মিন্টু বলেন, ‘কোন সবজিটার দাম কম? প্রতিদিনই এদের জিনিসপত্রের দাম বাড়ে।

দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অনেকে আবার সরকারকেও দোষারোপ করছেন। তুহিন নামের এক ক্রেতার অভিযোগ, বাজারগুলোতে মূল্য তালিকার বোর্ড নিয়মিত লেখা হয় না। শুধু রমজান মাস আসলে বাজারের কথা মাথায় আসে সরকারের। তাছাড়া সারাবছর বাজার মনিটরিং হয় না বললেই চলে।

গত শুক্রবার বাজারভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছিল কাঁচা মরিচের দাম। দাম উঠেছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। চিচিঙ্গা ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে এক কেজি বরবটির জন্য, ঢেড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, একই দাম পটলের। পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

আকার ও মানভেদে এক হালি কাঁচকলার জন্য ক্রেতার পকেট থেকে যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল রুই মাছের দাম। সপ্তাহে কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রুই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, মৃগেল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

আরো পড়ুন :
পাইকগাছায় গাঁজা ও ছুরা সহ আটক ১
পলাশবাড়ীতে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখী সংঘর্ঘে নিহত-৪

গত সপ্তাহে কেজিতে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল চিংড়ির দাম। মান ও আকারভেদে এ সপ্তাহে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। লেয়ার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। গরুর মাংস আগের মতই ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জুলাই ৩০.২০২১ at ২১:২০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএমডি/এসআর