পাইকগাছায় গত এক সপ্তাহে ৪ টি বাল্য বিয়ে, জরিমানা আদায়

খুলনার পাইকগাছায় কড়া তৎপরতা থাকলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাল্য বিয়ের অপতৎপরতা থামছেনা। ভ্রাম্যমান আদালত সহ বিভিন্ন প্রকার সাজা বা অর্থদণ্ড দিলেও কমছে না এ বাল্য বিয়ে। গত এক সপ্তাহে ৪টি বাল্য বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।এর মধ্যে ৩টি হয়েছে আইন বহির্ভূত নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এবং ১টি হয়েছে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়ের বাবার বাড়িতে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রাড়ুলী গ্রামের আবু সায়েদ মালী তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে পার্শ্ববর্তী কাটিপাড়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুম বিল্লাহর সাথে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে দেন। লক্ষীখোলার রুহুল আমিন গাজী তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে দেন পার্শ্ববর্তী রফিকুল সরদারের ছেলের সাথে।

শুক্রবার হরিঢালীর আতিয়ার রহমানের ছেলে আনারুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী শ্যামনগরের আবুল হোসেনের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে। ৪দিন নিখোঁজ থাকার পর অভিযান চালিয়ে ছেলের মামার বাড়ি থেকে ছেলে ও মেয়েকে আটক করা হয়। একই রাতে হরিঢালীর গৌরাঙ্গ বিশ্বাস তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে ডুমুরিয়ার পঞ্চানন বিশ্বাসের ছেলে সমীর বিশ্বাসের সাথে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর নির্দেশে সহকারী কমিশনার(ভূমি) শাহরিয়ার হকের নেতৃত্বে তাদের উদ্ধার করা হয়। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক মোঃ আলতাফ হোসেন, আনসার কমান্ডার আবু হানিফ, ইউনিয়ন লিডার মোঃ ফয়সাল হোসেন ও ভিডিপি সদস্য আব্দুস সামাদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। ৪টি বাল্য বিয়েতে উপজেলা প্রশাসন পৃথকভাবে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা বাল্যবিবাহ নিয়ে মহিলা সমিতির মাধ্যমে গ্রামে সভা সমাবেশ করে মানুষকে বুঝালেও আমাদের অগোচরে তারা নাবালিকা ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন।উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, আনসার ও ভিডিপির খুলনা জেলা কমান্ড্যান্ট হাফিজ আল মোয়াম্মাদ গাদ্দাফী মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নির্দেশে আমরা তাৎক্ষণিক অভিযানে অংশ নিচ্ছি।

আরো পড়ুন:
খুলনায় শেখ আবু নাসের হাসপাতালে ৪৫ বেড নিয়ে করোনা ইউনিট চালু
যশোর সদর উপজেলা পরিষদের টেলিমেডিসিন সেবা চালু, মিলবে বিনামূল্যে ওষুধও

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, কিছু অসাধু মানুষের কারনে এ অপতৎপরতার রশি টেনে ধরে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।আমরা এ নিয়ে থানার ওসি এজাজ শফীকে নিয়ে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেছি।কিন্তু ফল হচ্ছেনা। তবে আগামীতে এমন কোন ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জুলাই,০৩.২০২১ at ২০:২২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমটি/এসআর