গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও শারীরিক নির্যাতন মামলায় চার আসামীর জামিন

গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও শারীরিক নির্যাতন করায় বিচার আইনে মামলা করেছিলেন পলি খাতুন নামে এক গৃহবধু। আদালত থেকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করার পর ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ এই মামলার চার আসামীকে রোববার গ্রেফতার করে।

অথচ গ্রেফতারের কয়েক ঘন্টার মধ্যে আসামীরা কারাগারে না গিয়েই আদালত থেকে জামিন পেয়ে যান। এ ঘটনায় হতাশ বাদী পলি খাতুন ও তার নিয়োজিত আইনজীবী এড নজরুল ইসলাম। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ আজিজার রহমানের ছেলে মুন্সী শাহীন রেজা সাঈদ, জোহা শেখের ছেলে মোঃ পাপলু শেখ, মৃত আজম আলীর ছেলে মোঃ আব্দুর রহিম লাল্টু ও বৈডাঙ্গা গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে রাসেল।

বাদীর আইনজীবী এড নজরুল ইসলাম খবরের সত্যতা স্বীকার করে সোমবার বিকালে জানান, ৩১ জানুয়ারি সাগান্না ইউনিয়নের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের প্রবাসী শাহীনের স্ত্রী পলি খাতুনের ঘরে উঠে ধরা পড়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুন্সী শাহীন রেজা সাঈদের ছেলে মাসুদ রানা। ঘটনার দিন তিনি এই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন এসে আপত্তিকর অবস্থায় তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে গৃহবধূ পলিকে তালাক দেয় তার প্রবাসী স্বামী শাহীন।

শাহীন সদর উপজেলার বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের ছেলে। অন্যদিকে পলি খাতুন একই উপজেলার সনাতনপুর গ্রামের আব্দুল ওহাবের মেয়ে। স্বামী কর্তৃক তালাক প্রাপ্ত হয়ে আদালতে বিচার আইনের ৪/৫ ধারা (জামিন অযোগ্য) এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুইটি মামলা করেন পলি খাতুন। রোববার ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ আসামীদের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।

আরো পড়ুন:
আত্রাই আবাদি জমিতে চলছে পুকুর খনন
চৌগাছায় ১০ম দিনে ১৭ জনের নমুনায় আক্রান্ত ১২

ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামীদের জামিন দেন। জামিন পাওয়ার পর আসামী মুন্সি সাইদ জানান, মামলাটি মিমাংশা হয়ে গেছে। তবে ভুক্তভোগীর আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, আদালতে তারা মিথ্য তথ্য দিয়ে জামিন নিয়ছেন। কারণ এই মামলা মিমাংশা করার কথা বলে আসামীরা প্রতারণা করেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রেবেকা খাতুন অভিযোগ করেন, আ’লীগ নেতা সাঈদ মুন্সীর ছেলে মেয়েটার সংসার ভাঙলো। মেয়েটাকে জিম্মি করে তার স্বামীকে দিয়ে তালাক দিল। আবার জামিন অযোগ্যধারার মামলায় তারা জামিনও হয়ে গেলো। বাদি পলি খাতুন জানান, আমি ন্যায় বিচারের আশায় আদালতে মামলা করেছিলাম। কিন্তু যা হলো তাতে আমি হতাশ। কোথায় গেলে আমি ন্যায় বিচার পাবো ?

জুন ,২৮.২০২১ at ১৬:৫০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কেএল/এসআর