ঝিনাইদহে পারিবারিক ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা

পারিবারিক ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, জোরপূর্বক সীমানা পিলার উঠিয়ে জমি দখলের চেষ্টা এবং মৃত সৎভাইকে জীবিত দেখিয়ে ১১ ভাইয়ের স্বাক্ষর জালিয়াতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামের মৃত আফছার উদ্দিন খাঁ এর ছেলে মহিউদ্দিন খাঁসহ ১১ ভাই। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনাতনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পারিবারিক ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা, স্ক্ষার জালিয়াতি, অপপ্রচারের জবাব দেন ধানহাড়িয়া গ্রামের মহিউদ্দিন খাঁ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ৩০ বছর আগে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিসহ ১১ জনের সাক্ষর জাল করে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া মৌজার জমি অধিগ্রহনের টাকা তুলে নেওয়ার হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন খাঁ অভিযোগ করেন, মৃতব্যক্তিসহ ১১ ভাইয়ের সাক্ষর জালিয়াতি করে জমি অধিগ্রহনের টাকা তুলে নেওয়ার পরও অবশিষ্ট জমির সীমানা পিলার উঠিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমাদেরকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ১৬০ নং ধানহাড়িয়া মৌজায় আর এস চুড়ান্ত ৫২ নং খতিয়ানে ২৮৪ দাগে ৯৬ শতক জমি ছিল। তার মধ্যে আমার পিতার দেওয়া আমার সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁর নামে দলিলকৃত ৭৯ শতক জমি রয়েছে। বাকি ১৭ শতক জমি আমাদের ১১ ভাইয়ের নামে,যাহার দলিল নং ৪৫৭/৮৩ রেজিঃ তারিখ-১১/০১/১৯৮৩। কিন্তু আমার সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁ একটি গ্যাস কোম্পানীর কাছে আমাদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করে আমাদের সাক্ষর জাল করে ক্ষতি পূরণের সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেয়। ১৯৮৪ সালে আব্দুল কুদ্দুস খাঁ মারা যান।

অথচ ২০১৪ সালে তার সাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি ১০ ভাইয়ের সাক্ষরও নকল করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মামলা নং-৩০৩/২০। মামলার সমন জারির হওয়ার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আপোষ রফার পর সৎ ভাই আবু বক্কর ও আব্দুল মতলেব খাঁকে ৭৯ শতক জমি বুঝিয়ে দিয়ে বাকি ১৭ শতক জমিতে পিলার পুতে দেওয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ জুন মিমাংসাকৃত ১৭ শতক জমির পিলার উপড়িয়ে জোর পুর্বক দখল করে নেওয়া হয়।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্মানীয় ব্যক্তিদের নামে অশ্লীল ভাষায় মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এঘটনার সঙ্গে সৎ ভাই আব্দুল মতলেব, শের আলী খাঁ, মুরাদ আলী খাঁর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলু, কামাল খাঁ ওরফে ফিটু, বিপুল খাঁ জড়িত। এদিকে পোড়াহাটী ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি সহকারী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের এক প্রত্যায়নপত্র থেকে জানা গেছে ১৬০ নং ধানহাড়িয়া মৌজার আরএস ৫২ নং খতিয়ানের ২৮১ ও ২৮৪ দাগে ৮০ শতক জমির মুল মালিক হচ্ছে আব্দুল মতলেব খাঁ। তিনি ১৪২৮ বাংলা সন পর্যন্ত খাজনাও দিয়েছেন।

আরো পড়ুন:
শিবগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
রাণীশংকৈলে বীর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন
ঘোড়াঘাটে বিনামূল্যে ক্ষুরা রোগের টিকাদান কর্মসূচি’র উদ্বোধন

পোড়াহাটী ইউনিয়ন ভুমি অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২৮৪ দাগের মোট ৩৩ শতক জমি অধিগ্রহন করা হয়। এরমধ্যে আব্দুল মতলেব খাঁর ৮ শতক, আবু বক্কার খাঁর ১৫ শতক ও আবু বকর খাঁ অন্যজনের কাছে বিক্রিত ১০ শতক জমি। বিষয়টি নিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম ফিটু ও দেলোয়ার হোসন খাঁ দুলু জানান, সাক্ষর জালের খবরটি তারা বলতে পারবেন না। ২০১৪ সালের ৭ জুলাই তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমের দেওয়া প্রত্যায়নে ১১ জনের সাক্ষর ছিল। সেটা জাল কিনা তা তদন্তের বিষয়। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ আব্দুল মতলেব খার সন্তানেরা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ২৮৪ দাগে কেবল তাদেরই জমি রয়েছে। মহিউদ্দীন খাঁর দাবীকৃত জমি সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী অধিগ্রহন করে নিয়েছে।