শিবসার জোয়ারে লোনা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে পাইকগাছা পৌরসদর

শিবসা নদীর প্রবল জোয়ারের উগ্রে দেওয়া লোনা পানিতে প্রতিনিয়ত তলিয়ে যাচ্ছে খুলনার পাইকগাছা পৌরসদরসহ বিভিন্ন এলাকা। সুরক্ষা বাঁধ না থাকায় শিবসার নাব্যতা সংকটে গত কয়েক বছর ধরে জোয়ারের ঠেলে দেওয়া লোনা পানিতে পৌর সদরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় জনভোগান্তি এখন চরমে পৌছেছে।

এর আগে জনদাবির মুখে ১৯৯৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সংসদ সদস্য মরহুম অ্যাডভোকেট শেখ মোঃ নুরুল হক’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জেলার প্রথম পাইকগাছাকে পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। তবে পাইকগাছাকে পৌরসভা ঘোষণা করা হলেও কার্যত নাগরিক সুবিধা বাড়েনি এতটুকু। এখন পর্যন্ত পৌরসভার কোন সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করায় অন্যদিকে পাশ দিয়ে বয়ে চলা শিবসা নদীর নাব্যতা হ্রাসে মৌসুমের বিভিন্ন সময় জোয়ারের প্রবল চাপে উগ্রে দেওয়া লোনা পানি ঢুকে পড়ে পৌর সদরের বিভিন্ন অংশে।

এতে জনভোগান্তি চরমে ঠেকলেও ব্যবস্থা গ্রহনে এগিয়ে আসেনি কেউ। এনিয়ে বিভিন্ন সময় জনঅসন্তোষ দাঁনা বাঁধলেও কার্যত নানা সংকটে ঐসব আন্দোলনে সফলতা আসেনি।

তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, ৫.২২ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত এ পৌরসভায় প্রায় ৪০ হাজারেরও অধিক মানুষের বসবাস। তিনবারের নির্বাচিত (বর্তমান) মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর পৌরসভার নাগরিক সুবিধায় নিরলস কাজ করছেন। এমনকি তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করলেও রক্ষাবাঁধ নির্মানে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। অন্যদিকে শিবসা নদী খননেও গতি না হওয়ায় এর নাব্যতা হ্রাসে জোযারের সময় নদীর উগ্রে দেওয়া লবণ পানিতে জনভোগান্তিও বেড়েছে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি।

প্রসঙ্গত, পাইকগাছা পৌরসভার একপাশে কপোতাক্ষ নদ ও দু’পাশে বয়ে গেছে শিবসা নদী । অন্যপাশে বয়ে গেছে প্রধান সড়ক। মূলত কপোতাক্ষের বাঁধ থাকলেও পৌসভার ২৫ বছরেও নির্মিত হয়নি শিবসার কোন সুরক্ষা বাঁধ। আর এতেই ভোগান্তি বেড়েছে উগ্রে দেওয়া লোনা পানিতে। প্রবল জোয়ারের পানিতে পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক বা নীচু এলাকা লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে, প্রধান সড়ক, কাপড় পট্টি, কাঁচা বাজার, মাছ কাটা, পৌর ভবনের মাঠ এমন কি উপজেলা সরকারি দপ্তর সমূহের চত্বর। হাটু পানিতে জনদুর্ভোগ বাড়লেও ঘুম ভাংছেনা কর্তৃপক্ষের।

আরো পড়ুন:
সিলেটে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস খাবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭২ শিশু

এব্যাপারে পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্থক্ষেপ কামনা করে বলেন, বাঁধ রক্ষার জন্য বার বার উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেও কার্যত কোন ফল হয়নি।

উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু জানান, আমি এ শহরের প্রান কেন্দ্রের একজন বাসিন্দা। এই মূহুর্তে জনভোগান্তি থেকে পরিত্রাণে শহর রক্ষা বাঁধের বিকল্প নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী নদীর চর ভরাটি জমি দখল, নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলা , ওয়াপদা কেটে পাইপ বসিয়ে পানি সরবরাহে মারাত্মক ক্ষতির কারণ উল্লেখ করে জানান, এ সকল ব্যাপারে কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে শহর ওক্ষায় বাঁধ নির্মাণে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি পাইকগাছা পৌরসভার আরও আধুনিকায়নে শহর রক্ষা বাঁধ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। অতি দ্রুত বাঁধের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।