প্রতারণা ও হয়রাণির শিকার কপিলমুনিতে সেলিম হাজরার সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছার নগরশ্রীরামপুরের মীর আকরাম হোসেন নামে এক প্রতারকের প্রতারণার চক্রে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিভিন্ন ব্যাংক-এনজিওসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তার প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্তরা পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনায় এবার ভূক্তভোগীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই এলাকার সেলিম হাজরা।

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার কপিলমুনি সিটি প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত জণাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেলিমের অভিযোগ, কপিলমুনির শহরতলী নগরশ্রীরামপুরের মীর আহম্মদ আলীর ছেলে মীর আকরাম হোসেন দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিওসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছ থেকে ব্যবসার নামে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করে বিভিন্ন সময় উল্টো মিথ্যা নাটকে হয়রাণি করে আসছে।

সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, তার কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে প্রথমত নানাবিধ টালবাহানা ও পরে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে মিথ্যাচার ও মিথ্যা মামলায় হয়রাণির হুমকি দেয়। অনেকাংশে নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত সাজিয়ে বিভিন্নজনের সফটকর্ণার আদায়ের অপচেষ্টা করে। কখনো কখনো নিজ স্ত্রীকে ব্যবহার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেনা। সর্বশেষ তার কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে যার নং- ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কপিলমুনি শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০২০৮১১১০০০০০১৫৪। চেক নং-বি-৭৬৬৮০৩৭ পরিশোধ না করে বিভিন্ন সময় নানা টালবাহানা শুরু করে।

একপর্যায়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে টাকার তাগাদায় তার বাড়িতে গেলে উল্টো বিভিন্ন হুমকি-ধামকি এমনকি মিথ্যা মামলায় হয়রাণির হুমকি দেয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের জানালেও কোন কাজ হয়নি। উল্টো ঐ দিনই মিথ্যা বর্ণনায় পাইকগাছা থানায় তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী করে। যার নং-১১৫৮। শুধু এখানেই শেষ নয়। তার কাছে পাওনা টাকা না দেওয়ার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য ও বর্ণনায় তার বিরুদ্ধে নানাবিধ কুৎসা রটিয়ে স্ত্রী মমতাজ বেগমকে দিয়ে (২৪ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদ সম্মেলন করে।

নিজের পাওনা আদায় ও বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের প্রতিবাদে আজকের সম্মেলন উল্লেখ করে ভূক্তভোগী মৃত মোফাজ্জেল হাজরার ছেলে সেলিম হাজরা আরো জানান, আকরাম একজন চাউল ব্যবসায়ী। নিজের ব্যবসার লোকসান ও করোনাকালের দোয়াই দিয়ে তার টাকা না দেওয়ার ফন্দি হিসেবেই সে সংবাদ সম্মেলন ও জিডি করেছে বলেও অভিযোগ তার।

সেলিম হাজরা আরো জানান, গত দুই বছর আগে যুদ্ধ বিধ্বস্থ ইরাকে প্রতি মূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৭ বছরের প্রবাস জীবন কাটিয়ে কষ্টার্জিত উপার্জনের টাকা হাতিয়ে নিতে মূলত নানা ফন্দি-ফিকিরে আটকে সে তার কাছ থেকে উক্ত দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, তিনি ছাড়াও বহু ব্যাংক,এনজিওসহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সে অনুরুপ প্রতারণা করেছে। যা পরবর্তিতে সেলিম জানতে পারেন বলেও জানানো হয়। এর আগেও টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে পাইকগাছার একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কমূচারীদের বিরুদ্ধাচারণ করে মিথ্যাচার করে হয়রাণি করে। এছাড়া এসংক্রান্তে আরো অন্তত ৩ টি মামলা তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন রয়েছে। মামলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরো অর্ধ ডজন প্রতারিত মানুষ।

সম্মেলনে সেলিম আরো জানান যে, তিনি বর্তমান সরকারের শাষনামলে স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে ভাল সখ্যতাসহ সরকারের উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিদের সাথে কাজ করেন। তৃণমূলের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে সকলের সাথে তার সম্পর্কও ভাল। বিষয়টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ও দলীয় সংসদ সদস্যের চোখে তাকে খারাপ সাজাতে কূ-চক্রীদের পরামর্শে আকরামের স্ত্রী মমতাজ এমপি’র নাম ভাঙ্গানোসহ নেশা খোর হিসেবে তাকে প্রমানের ব্যর্থ অপচেষ্টা করে। সম্মেলনে তিনি ঘটনার প্রতিকার ও পাওনা টাকা আদায়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১ at২১:৪১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আর্ক/এসএনএস/এমএসএইস