পেঁয়াজ বীজের তীব্র সংকটে হতাশায় পেঁয়াজ চাষীরা

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় পেঁয়াজ বীজের তীব্র সংকট। এ দোকান-সে দোকান ঘুরেও মিলছে না কাক্ষিত বীজের দেখা। এ নিয়ে চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা গেছে। করোনাকালে বীজ আমদানি করা হাইব্রিড উচ্চফলনশীল জাতের পেঁয়াজ বীজ বিভিন্ন দেশ থেকে চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করতে না পারায় এ সংকট বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ঝিনইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ছয় হাজার ৭৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বীজের সন্ধানে কৃষকরা শৈলকূপা উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের বীজ ব্যবসায়ীর দোকানে ঘুরে পেয়াজ বীজের দেখা মিলছেনা। বর্তমানে বাজারে হাইব্রিড জাতের এক কেজি বীজ ১৫ হাজার, লাল তীর কিং ১২ হাজার, লাল তীর-বিশ সাত হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের চাষি শ্যামল সরকার জানান, ৬ মন পেঁয়াজ বিক্রি করে এক কেজি পেঁয়াজ বীজ ১৫ হাজার টাকায় কিনেছেন।

আরও পড়ুন:
শিবগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় মা সহ কলেজ ছাত্রী আহত
রাজশাহী নগরীতে পাঁচ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারী আটক
ভাস্কর্যকে মূর্তি বলা জ্ঞানের স্বল্পতা : ওলামা লীগ

গত বছর তিনি এ বীজ কিনেছিলেন ৬হাজার টাকায়। অথচ এবার এত দামের পরও মিলছে না বীজ।আউশিয়া গ্রামের চাষি রকি বিশ্বাস জানান, তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবেন। এক বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের পেঁয়াজ চাষ করলে ৬০-৭০ মণ পেঁয়াজ পাওয়া যায়। খরচ আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার বেশি। এক কেজি পেঁয়াজ বীজ ভালো হলে তা থেকে যে চারা পাওয়া যাবে, তা এক বিঘা জমিতে রোপণ করা যায়। তিনি আরো জানান, ১৫ হাজার টাকায়ও মিলছে না এক কেজি পেঁয়াজের বীজ। শতকরা ৫০ জন চাষি আগাম বীজ রোপণ করেছিলেন বীজতলায়। তাদের মধ্যে আবার অর্ধেক চাষির বীজ নষ্ট হয়েছে।

এজন্য আরও সংকট দেখা দিয়েছে বলে পেঁয়াজচাষি রকি জানান।শৈলকূপা বাজারের দিশারী বীজ ভান্ডারের মালিক রাশেদুল হাসান জানান, পেঁয়াজ বীজের তীব্র সংকট। তারাও কোনো পাইকারি দোকানে মেলাতে পারছেন না চাষিদের চাহিদার বীজ। তিনি এক কেজি লাল তীর কিং ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও তিনি আর কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না এ বীজ। ফলে চাষিরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসেন জানান, শৈলকূপা দেশের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা।

তিনিও শুনেছেন পেঁয়াজের বীজের সংকটের কথা। উপজেলায় এবার ছয় হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গতবছরের থেকে এবার বেশি দামে বীজ বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে অধিক ফলনের জন্য চাষিরা আর দেশি জাতের পেঁয়াজ চাষ করতে চান না। হাইব্রিড জাতের বীজ বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। করোনাকালে আমদানিকারকরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বীজ আমদানি করতে না পারায় হয়তো এ সংকট বলে তিনি জানান।

১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ১৮:১২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএইচ/আরএইচ