বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন

সারাদেশের ন্যায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন উপলক্ষ্যে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের আয়োজনে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে শনিবার (৩১শে অক্টোবর) সকাল ১০টার সময় বড়বাজারের শহীদ হাসান চত্ত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে যেয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলার মানবিক পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ হাজী আলী আজগার টগর।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য সচিব মোঃ মনিরুজ্জামান। এছাড়া জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন এজেন্সির প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় প্রধান অতিথি সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়৷ তবে পুলিশকে সাধারণ মানুষের কথার গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে। কোনপ্রকার পক্ষপাতিত্ব করা যাবেনা। এখন জনপ্রতিনিধিরা নয়, পুলিশই হচ্ছে জনগণের শেষ ভরসার স্থান। এদিকটাও আপনাদের খেয়াল করতে হবে। সর্বোপরি মাদক ও জঙ্গি দমন ছাড়াও বিভিন্ন কাজে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার।

এ সময় অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হাজী আলী আজগার টগর বলেন, পুলিশের সেবার মান অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অনেক ভালো। দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আসুন আপনারা আমরা সবাই মিলে কমিউনিটি পুলিশকে সহযোগিতা করি। তিনি আরও বলেন, একটি দেশকে ধ্বংস করার জন্য মাদক অনেকাংশে দায়ী। আমরা কেউ যেন মাদকের বিষয়ে কারো কাছে কোনপ্রকার সুপারিশ না করি। আমি বিগত ১২ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আছি। আজ পর্যন্ত মাদকের বিষয়ে কারো কাছে কোন সুপারিশ করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। আশাকরি আপনারা ও কেউ মাদকের ব্যাপারে কারো কাছে কোন সুপারিশ করবেন না। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ রোধ করতে সবারই উচিত পুলিশকে সহযোগিতা করা।
পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আগের তুলনায় মানুষের কাছে পুলিশের আস্থা অনেক বেড়েছে। বাড়িওয়ালা রাগ করে বাড়ি থেকে চলে গেলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য মানুষ এখন পুলিশকে ফোন করে, সহযোগিতা চায়। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ পুলিশ এখন বিশ্বের রোলমডেল। অনেক উন্নত দেশ বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে গবেষণা করে। ঝড়ে রাস্তার উপর গাছ পড়ে থাকলেও পুলিশ সদস্যরা তা পরিষ্কার করে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে তোলে। এসব কাজ তো পুলিশের নয় তাও আমরা করছি। তিনি আরও বলেন, মাদক উদ্ধার করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজ হলেও বাংলাদেশ পুলিশ মাদক উদ্ধারে এখন চ্যাম্পিয়ন। পুলিশের কাজে আরও গতি আনতে জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন এজেন্সির প্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।

আলোচনাসভা শেষে সকলের উপস্থিতিতে অতিথিদেরকে সাথে নিয়ে কেক কেটে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন করা হয়। পরে অতিথিরা জেলা পুলিশের আয়োজনে মধ্যাহ্ণভোজনে অংশ নেন।