মোবাইলে বিকাশ করলেই মেলে বিদ্যুতের চুরি যাওয়া মিটার

পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকদের মিটার চুরি এখন নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। চোর চক্রের একটি শক্তিশালী দল গাইবান্ধার বিভিন্ন জায়গা থেকে মিটার চুরি করে তাদের ফোন নম্বর রেখে যায়। ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে বিকাশে টাকার বিনিময়ে মিটারটি আবার ফেরতও পাওয়া যায়। মিটার চুরির সাথে পল্লীবিদ্যুতের নিজস্ব লোকজন জড়িত বলে মনে করছেন ভুক্তভুগিরা।

তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে চোর ধরার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান পুলিশ।

বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে সেচ ও চাতাল কলে ব্যবহারিত বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। মিটার চুরির পরে মিটারের স্থানে রেখে যায় চোরের মোবাইল নাম্বার। এর পরে সেই নাম্বারে যোগাযোগ করলে মোটা অংকের টাকার দাবী করেন। পরে তাদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে টাকা দিলে চোরের দেয়া ঠিকানায় মেলে সেই চুরি যাওয়া মিটার ।

সাঘাটা গোরের পাড়া গ্রামের মো: শাহিন আলম জানান, আমার মিটার হাড়ানোর পরে মিটারের স্থানে রেখে যাওয়া নাম্বারটিতে ফোন দেই। তারা মিটার ফেরতের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবী করে। বিষয়টি থানায় অবগত করার পরেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এর পরে চোরের দেয়া একটা বিকাশ নাম্বারে ৮ হাজার টাকা দেয়ার পরে আমার মিটার উদ্ধার হয়।

সাঘাটা বোনারপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো: মোখছেদুর রহমান জানান, আমার মিটার চুরির পরে থানায় জিডি করার পরেও কোন প্রতিকার পাইনি। পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

চোরের সাথে ৫০ বারের বেশী মোবাইলে কথা হয়েছে। তারা টাকা ছাড়া মিটার দিতে রাজি হয়নি। পরে চোরের বিকাশে ৬ হাজার টাকা দেয়ার পরে তাদের দেয়া ঠিকানায় নিদিষ্ট স্থান থেকে মিটার উদ্ধার করি।

সাঘাটার কামালের পাড়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার জয়নুল আবেদীন জানান, মিটার চুরির সাথে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন জড়িত। কেননা ফোন নাম্বার ব্যবহার করে মিটার চুরির পরেও বিদুৎ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে না কেন?

মিটার চুরির বিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলেও তাদের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। চড়া মূল্যে আবারো ওই গ্রাহকের কাছে মিটার বিক্রি করে ফায়দা লুটানোই যেন তাদের কাজ।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজার ছানাউল্লাহ বলেন, মিটার চুরি হলে আমরা গ্রাহককে থানায় জিডি করতে বলি। জিডি কপি জমা দিলে আবারো তাদের মিটার দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কিছুটা কম টাকা নেয়া হয় তাদের থেকে। এছাড়াও তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে কারা এই চুরির সাথে জড়িত। মানুষ সন্দেহে অনেক কিছুই বলতে পারে।

চুরি থামাতে পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে কথা বললে সাঘাটা থানার পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, যেহেতু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বৈদুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। তাই তথ্য- প্রযুক্তির ব্যবহার করে চোর ধরার ব্যবস্থা করা হবে।

এক মাসে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে প্রায় এক ডজন বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১৯:৫১:১৩ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসকেবি/এনআফটি