তাহিরপুরে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে হয়রানি করার অভিযোগ বিকাশ এজেন্ট তপনের বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন’র শ্রীপুর বাজারে বিকাশ এজেন্ট (এমএস গুরুদেব ভান্ডার) পরিচালক তপন পালের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন হয়রানী ও স্কুলের ছাত্রীরা তার লালসার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন, বিকাশ একাউন্ট খুলতে ও মোবাইল সিম রিপ্লেস করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন পার্সোনাল বিকাশ ও অন্যান্য একাউন্টের গ্রাহকরা। আর শিক্ষার্থীদের নানাভাবে অঙ্গভঙ্গী করেন বলে অভিযোগ করেছেন ঐ এলাকার শিক্ষার্থীসহ ভুক্তভোগীরা।

আরো পড়ুন :
আমফানে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু অন্তত ১৮
‘নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে আম্ফান, ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে ১০দিন লাগবে’
শুক্র ও শনিবার যেসব এলাকায় ব্যাংক খোলা

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বিকাশ একাউন্ট ও অন্যান্য একাউন্ট খুলতে নিচ্ছে ৫০-১শ টাকা, মোবাইল সিম রিপ্লেস করতে নিচ্ছে ৩শ টাকা ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করলে হাজারে নিচ্ছে ১শ টাকা এবং মিনিট কার্ড-টাকার কার্ড ক্রয় করতে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে। সাধারণ মানুষ নিরুপায় হয়ে বিকাশ এজেন্ট গ্রাহকদের অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের কথা না মানলে অন্য বাজারে গিয়ে ক্যাশ আউট করে টাকা উত্তোলন করতে হবে, আর সেজন্য যাতায়াত খরচও হবে ৫০-৬০টাকা। সে জন্যই বাধ্য হয়ে তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও লালসার শিকার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ গ্রাহকদের। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী হুমায়ুন, হাবিবুর, শফিকসহ আরো অনেকেই জানান, খাইরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি একটি হারানো সিম রিপ্লেস করে ৩শ টাকা ও সিমে থাকা উপবৃত্তির ১২শ টাকা ক্যাশ আউট করে ১শ টাকা নেন বিকাশ এজেন্ট গ্রাহক এমএস গুরুদেব ভান্ডার’র পরিচালক তপন পাল। তপন পালের মতো আরও অনেক বিকাশ এজেন্ট গ্রাহক সাধারন মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে। আর বিকাশ এজেন্ট গ্রাহকরা,হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। যেন দেখার কেউ-ই নেই। বিকাশ এজেন্ট গ্রাহক তপন পাল, রফিকুল, সুহেলসহ নজরুলের অনিয়ম-দুর্নীতির ও লালসার বিয়ষ তুলে ধরেন সংবাদকর্মীদের কাছে।

নয়াবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা গরিব বলেই সরকার আমাদেরকে উপবৃত্তি দেয়, আর উপবৃত্তির টাকা তুলতে গেলে বিকাশ এজেন্ট গ্রাহকদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আমি গত দু’দিন আগে উপবৃত্তির ৩শ টাকা তপন পাল’র বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে ক্যাশ আউট করি, পরে আমার ৩শ টাকা থেকে ২০টাকা রেখে ২৮০টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দেয়।

অভিযুক্ত এমএস গুরুদেব ভান্ডার’পরিচালক তপন ও রফিকুল টেলিকমের পরিচালক রফিকুল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করে বলেন-এভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা রাখার কোন নিয়ম নেই। তবে আমরা উপবৃত্তির ৩শ টাকা থেকে ২০-৩০টাকা নেই। সিম রিপ্লেস করলে ২৫০-৩শ টাকা নেই। ১০টাকার মিনিট কার্ড ১২টাকা বিক্রি করি। না হলে আমাদের পোষায় না।

মিজান টেলিকম’র পরিচালক শাবালনূর বলেন-আমরা বিকাশ একাউন্ট ফ্রি খুলে দিচ্ছি,বিকাশ বা অন্যান্য একাউন্ট খুলতেও কোন টাকা লাগে না। উপবৃত্তির টাকা ক্যাশ আউট করলে কাস্টমারের একাউন্ট থেকে খরচ সরারসি কেটে নেওয়া হয়। এজেন্ট গ্রাহকদের কোন টাকা দেওয়া লাগেনা। আর যদিও কেউ টাকা নেয় তা অনিয়ম-দুর্নীতি।

এবিষয়ে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সুবল বলেন-বিকাশ দোকানীরা শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যদের সাথে যে অনিয়ম-দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

এবিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি মোঃ আতিকুর রহমান বলেন-এবিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে বিষয়টি আমরা তর্দন্ত করে দেখবো। যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মে ২১, ২০২০ at ১১:০১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/জেএ/এএডি