পাইকগাছায় তরমুজের বাম্পার ফলন : সরবরাহ হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়

খুলনার পাইকগাছার লবনাক্ত জমির সুমিষ্ট তরমুজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তরমুজের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন ক্ষেত থেকে শতাধিক ট্রাক-কার্গো করে বিভিন্ন জেলায় তরমুজ সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় চাষিরা বিভিন্ন জেলায় তরমুজের বাজার সৃষ্টি করতে পারায় চাহিদা ও দাম বেড়ছে। উচ্চ মূল্য পাওয়ায় চাষিরা খুবই খুশি। ১শত কোটি টাকা বেশী তরমুজ বিক্রি হবে বলে চাষি ও কৃষি অফিস ধারণা করছে।

পাইকগাছা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৫শত ১০ হক্টের জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে দেলুটিতে ৪ শত ৫০ হেক্টর ও গড়ইখালীতে ৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। পাইকগাছা থেকে যশোর, মাদারিপুর, নওগা, নাটোর, জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় তরমুজ যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা তরমুজ ক্ষেত বিঘা প্রতি ৫০ হাজার থেকে ৮ ০হাজার টাকা দরে ক্রয় করে তাদের লোক দিয়ে ক্ষেত পরিচর্যা ও ট্রাক-কার্গো করে তরমুজ নিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় আগাম তরমুজ আবাদ করা হয়, এসব ক্ষেতের তরমুজ প্রায় শেষে হতে চলেছ। তবে আবহাওয়ার কারণে এ এলাকায় নাবিতে তরমুজের আবাদ হয়। সে হিসাবে পাইকগাছা এখন তরমুজের ভরা মৌসুম। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়াতে তরমুজ বড় ও রং ভাল হয়েছে। আর মিষ্টিও বেশী। দেলুটির তরমুজ চাষি লোচন মণ্ডল বলেন, করোনা ভাইরাস প্রাদূর্ভাবে মনে আশা আবার হতাশা নিয়ে আবাদ শুরু করি। তরমুজের ফলন খুব ভাল হয়েছে । তাছাড়া বাহিরের ব্যবসায়ীর এসে ক্ষেত কিনে নেওয়ায় লাভ হয়েছে। বেশী লাভ হওয়ায় চাষিরা খুবই খুশি। গরমের সময় ঘেমে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া শরীরকে চাঙ্গা করতে তরমুজের কোন জুড়ি নেই। রসে টইটুম্বর তরমুজ কেবল আমাদের প্রশান্তিই দেয় না, স্বাস্থের জন্যও ভালো।

বাজারে গেলেই চোখে পড়ছে গ্রীষ্মের এই রসালো ফল। তরমুজ সবাই পছন্দ করে। তরমুজে প্রায় ৯২ শতাংশই পানি। ফলে এই গরমে ডিহাইড্রেশন দুর করতে তরমুজরে বিকল্প নেই। তরমুজের রসে ভিটামিন এ, সি, ই, বি-৬, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি থাকলেও ক্যালোরির মাত্রা কম। ফলে তরমুজ থেকে ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তা নেই। এজন্য তরমুজ সকলের প্রিয ফল।

করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ ঘর থেকে তুলনামুলক কম বের হওয়ায় তরমুজের চাহিদা কিছুটা কমে যায় তেমনি সরবরাহ ছিল আরো কম। তবে দিন যত যাচ্ছে বাজারে তরমুজের চাহিদা বাড়ছে। স্থানিয় বাজারে ২০ টাকা দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।সরবরাহও প্রচুর। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, তরমুজের ভাল ফলন হয়েছে। চাষিরা বাহিরের বাজার ধরতে পেরে উচ্চ মূল্যে তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হয়েছে। করোনা ভাইরাস দুর্যোগের মধ্যেও কৃষি অফিস থেকে চাষিদের পরার্মশসহ তরমুজ ক্ষেত তদারকি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, উচ্চ মূল্য পাওয়ায় আগামী বছরে আরো অধিক জমিতে তরমুজের আবাদ করতে চাষিরা আগ্রহী হয়েছে।তরমুজের চাষ কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মে ১৪, ২০২০ at ১১:১০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইএইচ/এএডি