গাইবান্ধায় কর্মহীন মানুষের ত্রাণের দাবীতে মানববন্ধন

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্য নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষত, নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তার আওতায় তালিকা করে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি নির্বাচিত মেম্বর, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, এমপি ও মন্ত্রীদের জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে খাদ্য সহায়তা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষের কাছে এখনও সরকারের খাদ্য সহায়তা পৌছেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি জনপ্রতিনিধিরাও তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। ফলে চরম খাদ্য সংকটে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাচ্ছে তাদের।বাধ্য হয়ে সরকারের নজরে আসতে

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম পিয়ারাপুর ফাঁরাজ খাঁর বাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক এসব ঘরবন্দি দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো খাবারের দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন করেছেন।

মানববন্ধনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বরদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ তোলেন সরকারের খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত এসব মানুষগুলো। তারা বলেন, সরকারের যে কোন সহায়তা পেতে চেয়ারম্যান-মেম্বরদের টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া মেলেনা কাঙ্ক্ষিত সহায়তা। চেয়ারম্যান-মেম্বরদের স্বজনপ্রীতির কারণে তারা ঘরবন্দি থেকেও পাচ্ছেন না খাদ্য সহায়তা। সরকারি খাদ্য সহায়তা পেতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খাবার বিতরণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: সরকারি ত্রাণ নিতে যাওয়া অসহায় ব্যক্তিকে চেয়ারম্যানের থাপ্পড়

তবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এম এ মাজেদ উদ্দিন খান আবদুল্লাহ দাবি করেন, ইউনিয়নে ১২ হাজার পরিবারের খানা আছে। এরমধ্য স্বচ্ছল পরিবার রয়েছে ৩ হাজার। বাকি ৯ হাজার পরিবার নিম্ন আয়ের।

তিনি বলেন, উপজেলা পিআইও’র দপ্তর থেকে এ পযর্ন্ত চারশো খাদ্য সহায়তা প্যাকেট বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এর মধ্য শুধু মাত্র ৮৫ জনকে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩১৫ জনকে শুধুমাত্র ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) মো. আনিসুর রহমান বলেন, গত ৯ এপ্রিল পযর্ন্ত ৮৬ মেট্রিক টন চাল, শিশু খাদ্য বাবদ ৩১ হাজার টাকা সহ মোট তিন লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এরমধ্য ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে ৭২ টন চাল ও দুই লাখ ৭০ হাজার টাকার আলু, ডাল, তেল সহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা ৭ হাজার ২০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। শিশু খাদ্য বিতরণ অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে বৃদ্ধের মৃত্যু

এছাড়া গতকাল আরও ১৪ মেট্রিকটন চাল ও শিশু খাদ্য বাবদ ৩১ হাজার টাকা সহ ১ লাখ ২১ হাজার টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করে এসব মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর খাদ্য সহায়তা বাবদ এ পযর্ন্ত ৭৯৫ মেট্রিকটন চাল ও শিশু খাদ্য বাবদ ৪ লাখ সহ ৩৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এর মধ্য ৬৫৮ মেট্রিক টন চাল ও শিশু খাদ্য সহ ২৯ লাখ টাকার খাদ্য সহায়তা বিতরণ কাযক্রম অব্যাহত আছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, কর্মহীন বঞ্চিত এসব পরিবারগুলোর মাঝে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি খাদ্য সহায়তা পৌছানোর ব্যবস্থা করা হবে।

দেশদর্পণ/এসকেবি/এসজে