অবশেষে উলিপুর হাট-বাজার পরিদর্শন করলেন সিনিয়র সহকারি কমিশনার

কুড়িগ্রাম জেলা সিনিয়র সহকারি কমিশনার (রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন উলিপুর হাট চলাকালিন হাট বাজারের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেন এবং মাটিতে বসা চটি দোকানদার ও ক্রেতা সাধারনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর উলিপুর পৌরসভা হলরুমে পৌরকর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে সর্ব সাধারনের কাছে বিভিন্ন সমস্যাগুলো শুনেন। এসময় উলিপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আনিচুর রহমান ও পৌর সচিব মাহবুবুল আলম এবং সহঃ প্রকৌশলী পৌরসভার গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেন। উভয়পক্ষ এবং উপস্থিত সকলের কথা শুনার পর সিনিয়র সহকারি কমিশনার নাজিম উদ্দিন ভূমি আইন ও এর ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবহার সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন হাটবাজার ইজারা দেয়ার এখতিয়ার পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশনের উপর অর্পিত হলেও ভুমি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারে আইনের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

হাটবাজারকে জনগনের ব্যবহারে দুইভাবে দেয়ার কথা উলে­খ করে বলেন, তোহাবাজার সৃষ্টি করা হয়েছে প্রান্তুিক কৃষক ও দোকান ঘর নাই এমন নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীদের মালপত্র বিক্রি জন্য, সাধারন ও ছোট ছোট দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করে এমন জনসাধারণ দের জন্যও অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার এ ব্যবস্থা চালু করেছে। এককালিন দোকান করে দখলে নেয়ার কোন সুযোগ নাই। চান্দিনা ঘরের আবেূন করে যাদের কিছু নেই তারা আবেদন করে ঘর একসনা লিজ নিতে পারেন। তিনি বলেন, আমি এখানে পরিস্থিতি দেখতে এসেছি, আপনাদের ভুমি ব্যবহারে আইনি কিছু ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম আপনাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন, সচেতনতা অর্জন হলে আপনাদের বিবাদমান এই জটিলতার সমাধান আপনারা নিজেরাই করে নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সামান্য সাহায্য বাঁচবে এক মেধাবি ছাত্র

এসময় উলিপুর পৌরসভার সচিব মাহাবুবুল আলম তাদের গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রমের বিপরীতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া ১ লক্ষ প াশ হাজার টাকা গ্রহনের পক্ষে যৌক্তিকতা দেখাতে গেলে সিনিঃ সহকারি কমিশনার নাজিম উদ্দিন একটু রেগে গিয়েই বলেন, আমি এখানে আইনের পক্ষে কাজ করতে এসেছি, আপনারা বারবার অনিয়মের বিষয়টি আমাকে উপস্থাপন করতে পারেন না। এখানে কোন সিদ্ধান্ত দিতেও আমি আসিনি, জেলা প্রশাসক মহোদয় সিদ্ধান্ত দিতে পারেন, তাই বলে এখতিয়ার বহির্ভুত হাটের জায়গার বিপরীতে অর্থ আদায় বিষয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে দুদকে কেউ মামলা দিলেই ফেসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি সচিব হিসেবে মেয়রকে ঠিকমত গাইডলাইন দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলেও ভৎসর্না করেন। তিনি বাজারে দোকান ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার স্বার্থে মিডিয়া কর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় পৌরসভা হলরুমে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মিঞা, উলিপুর বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম দুলু, জেলা পরিষদ সদস্য ফরহাদ হোসেন মোল­া, উলিপুর কাচামাল খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলজার হোসেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আবু জাফর সোহেল রানা, উলিপুর প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

উলে­খ্য, পৌরসভা হাটবাজার সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার নামে অনিয়ম ও নিয়মবহির্ভূত হাটের জমি লিজ দেয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনে উলিপুর পৌর কাচামাল খুচরা ও পাইকারি দোকান সমিতি এবং সাধারন জনগন ও প্রান্তিক কৃষকরা গত ১৯ ফেব্রæয়ারি ২০২০ ইং কাচামাল দোকান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন সহ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শতশত ব্যবসায়ী কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানসহ তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে অনুরোধ জানিয়েছিলো।

দেশদর্পণ/এজিএল/এসজে