জমজমাট মা-মেয়ের সুদে ব্যবসা

যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া আমতলায় মা-মেয়ের জমজমাট সুদে ব্যবসা চলেছে। সুদে টাকা উঠানোর জন্য রয়েছে তাদের গুন্ডা  বাহিনী। মা-মেয়ের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে অনেকে এলাকা ছাড়া হয়েছে। ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়না।

এলাকাবাসী জানায়, যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া আমতলার রশিদ বিহারীর স্ত্রী হেলেনা খাতুন ও তার মেয়ে রতœা খাতুন এলাকায় চড়া সুদে টাকার ব্যবসা করছে দীর্ঘদিন ধরে। বিপদগ্রস্ত মানুষ তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। টাকা দিতে না পারলে মা-মেয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে ওই সব বিপদগ্রস্ত মানুষের জমি, বাড়ির আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল জোর পূর্বক নিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, টাকা সুদে দেবার আগেও অনেকের মালামাল নিয়ে নিজের বাড়িতে এনে রাখে। পরে সুদে টাকা ফেরত দিলেও মালামাল আর দেয়না। মালামাল চাইলে উল্টো হয়রাণি করার হুমকি দেয়। আর এই মা-মেয়ের সুদে টাকা দিয়ে এলাকা ছাড়া হতে চলেছে মোল্লাপাড়া বাঁশতলা এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে রাসেল।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধ আ’লীগ অনেক বেশি শক্তিশালী: শাহীন চাকলাদার

রাসেল জানায়, তিনি হেলেনা খাতুনের কাছ থেকে দুই কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা নেয়। প্রথম কিস্তি ১০ হাজার টাকায় মাসে ৪ হাজার টাকা সূদ দেবার শর্তে। এসময় রাসেলের কাছ থেকে ব্যাংকের বøাংক চেকে সই করে নেন হেলেনা। এরপর তিন মাস সুদও দেন রাসেল। এরপর দ্বিতীয় বার আরও ১০ হাজার টাকা নেন। এবার মাসে নতুন ১০ হাজারের জন্য ২ হাজার সুদ দেবার কথা হয়। এ সময় হেলেনা খাতুন রাসেলের ঘরের ১৪ পিচ পর্দা, রুম হিটার, আয়রণ, কাঠের শোপিচ নিয়ে যায়। বছর খানেক ধরে রাসেল সুদের কোন টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। বর্তমানে হেলেনার সুদ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এই টাকার জন্য হেলেনা খাতুন ও তার মেয়ে রতœা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে রাসেলকে। জমিসহ বাড়ি লিখে দেবার জন্য রাসেলকে বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে ভয় দেখাচ্ছে সন্ত্রাসীদের। শুধু তাই নয়, পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে নেবার হুমকি দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভয়ে রাসেল দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে হেলেনা খাতুন বলেন, রাসেল মোটর সাইকেল রেখে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। কিন্তু টাকা না দিয়ে রাসেল মোটর সাইকেল নিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহের ছবি ধারণ করায় সাংবাদিককে মারপিট

হেলেনা খাতুনের সুদের কারবার থেকে শুধু রাসেল নয়, ওই এলাকার অনেক মহিলা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার চিনার স্ত্রী মনজিলা বেগম ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিল। বর্তমানে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা সূদ গুনতে হয় মনজিলা বেগমের। ভয়ে মনজিলা বেগম সুদের টাকা দিয়ে যাচ্ছেন।

মনজিলা বেগমের সুদের টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হেলেনা খাতুন বলেন, মনজিলা বেগমের কাছে আমার কোন সুদের টাকা দেওয়া নেই।

এ রকম সুদের যাতাকলে পড়ে পিষ্ট হচ্ছেন ওই এলাকার জীবনের বউ নাছিমা খাতুন। তিনি ৫ হাজার টাকা সুদে নিয়ে প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা সুদ গুনতে হচ্ছে। এ সম্পর্কে হেলেনা খাতুন বলেন, আমি জীবন ও তার বউকে চিনি না। আমি নাছিমা নামে কাউকে চিনি না।

দেশদর্পণ/একে/এসজে