প্রতিবন্ধী রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসকের অতিরিক্ত অর্থ আদায়!

চুয়াডাঙ্গা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ডা. নুর আলম আকাশ অফিস চলাকালীন সময় তার নিজ প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি তার নিজের ক্ষমতা বলে এ কাজ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।

শুধু তাইনা দুপুর হতে না হতেই তিনি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের রোগীদের বাধ্য করিয়ে তার ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের চুয়াডাঙ্গা ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। এ সময় তিনি তার ব্যাক্তিগত চেম্বারের রোগীদের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের রোগীদের চিকিৎসা দেন এবং রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করার জন্য তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ডা. নুর আলম আকাশ অফিস ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন দুপুর হতে না হতেই তার নিজের ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গা ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে যান। প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের সকল রোগীদের তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য করান তিনি। সকাল ১০ টা থেকে বেলা ৫ টা পর্যন্ত সেখানে রোগী দেখার নিয়ম থাকলেও এ নিয়মকে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাচ্ছেন।

তিনি প্রতিদিন দুপুর ১ টার পর তার ব্যাক্তিগত চেম্বারে চলে যান। চিকিৎসা নিতে আসা সকল রোগীতে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য করান। কোন রোগী যদি সেখানে যেতে না চায় তবে তার প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে সমস্যা হবে এমন অভিযোগও আছেন তার বিরুদ্ধে। রোগীরা বাধ্য হয়েইে তার প্রতিষ্ঠানে যান। রোববার দুপুর সরেজমিনে সেখানে গেলে তাকে না পেয়ে তার ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গা ফিজিওথেরাপি সেন্টারে পাওয়া যায়। এ সময় সেখানে অপেক্ষমান ছিলো প্রায় দেড় শতাধীক রোগী।
আরও পড়ুন: পূন: নির্মানের পরও ভেঙ্গে গেল কালভার্ট, দূর্ভোগে কয়েক গ্রামের মানুষ

দুর দুরান্ত থেকে আসা রোগীরা সন্ধা পর্যন্ত তার ব্যাক্তিগত চেম্বারের সামনে ভীড় করে দড়িয়ে ছিলেন চিকিৎসার অপেক্ষয়। এ সময় অপেক্ষমান আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের বাগুন্দা গ্রামের মৃত নাইচ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আনছার আলী, একই এলাকার মৃত হারুন মন্ডলের ছেলে নইছদ্দীন মন্ডল ও আলমডাঙ্গার হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বারের স্ত্রী হালিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের সামনে লাইনে দাড়িয়ে থাকার পর দুপুর ১ টার দিকে ডাক্তার বাইরে বের হয়ে যায়। সেখান থেকে বলা হয় সবাইকে
হাসপাতাল সড়কে চুয়াডাঙ্গা ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে। যে যাবেনা তার চিকিৎসা হবেনা। বাধ্য হয়েই সবাই সেখানে যান।

তারা আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করার জন্য তার প্রতিষ্ঠান থেকে করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির বেধে দেয়া রেট ৮০ টাকা হলেও তার প্রতিষ্ঠান থেকে কারতে হচ্ছে ১শ’ টাকা দিয়ে। এখানেও তিনি জনপ্রতি অতিরিক্ত ২০ টাকা আদায় করছেন।

অফিস চলাকালিন সময় তার ব্যাক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. নুর আলম আকাশ বিভিন্নস্থানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্ট করেন। তিনি বলেন ভুল হয়েছে আর হবেনা। অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কাগজ ফটোকপি করার জন্য একটু বেশিতো লাগবেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি দেখবো। যদি এ ধরনের কোন কিছু ঘটে থাকে তাহলে অবশ্যই তিনি অপরাধ করেছেন।

দেশদর্পণ/টিআর/এসজে