যাদুকাটা নদীর ৩০হাজার শ্রমিকের রুজি বন্ধে গভীর চক্রান্ত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী নদী যাদুকাটা নদীর উত্তোলিত বালু ও পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যাদুকাটা নদী শুকিয়ে গেয়েও ৩০হাজারের বেশী শ্রমিক নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলন করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে বংশপরমপরায়। আর তাদের ব্যবহার করেই অধিক মোনাফা লোভী একটি চক্র কোটি কোটি টাকার বালু পাথর বিভিন্ন স্থানে ষ্টক করেছে। সেই বালু ও পাথর অধিক দামে বিক্রি করার জন্য তাদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে এই নদীর পুরনো পাড় কাটার ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রচার, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে দিয়ে এবং মিথ্যা বনোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে একটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে নদী বন্ধের পায়তারা করছে। আর নদী বন্ধ হলে ১৫টাকার বালু হবে ৪০টাকা আর ৩০হাজর দিন মজুরসহ তাদের পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য অর্ধহারে অনাহারে দিনপার করবে।

জানা যায়, যাদুকাটা নদীর বালু ও পাথর সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের চাহিদার কারনে বালু পাথর উত্তোলন করে ষ্টিলবর্ডি, কার্গো, বড় ও ছোট দেশীয় নৌকা দিয়ে দেশের অভ্যন্তরের নৌপথ দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। অধিক চাহিদার কারনে মোনাফা লোভী একটি চক্রটি প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লালপুর, গজারিয়া, দুলভপুর ও ছাতক উপজেলাসহ ভিভিন্ন স্থানে লক্ষ লক্ষ সেফটি বালু স্টক করে রেখেছে। যাদুকাটা নদী বন্ধ করতে পারলেই এই ষ্টক করা বালু ও পাথর কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যে করার উদ্দেশ্য। এজন্য ঐচক্রটি এখন যাদুকাটা নদীর পুরনো পাড় কাটার ছবি প্রচার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে হাজার হাজার শ্রমিকদের পেঠে লাথি মারার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অথচ সরকারের কনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় এই যাদুকাটা নদীর ১২০হেক্টর জায়গা লীজে দেয়া হয়েছে এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে এই নদীতে সাধারন শ্রমিকরা সেলু মেশিন দিয়ে হাতে কাজ-কাম করে বালু ও পাথর উত্তোলন করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর ৩৪৫০ মিটার দৃশ্যমান

শ্রমিকরা জানান, নদীতে কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন রখমে সংসার চলে নদী বন্ধ হলে না খয়ে থাকতে হবে। আমাদের কথা কেউ ভাবে না। প্রশাসন যেন ঐসব অপ্রপ্রচারকারীদের কঠোর হস্থে দমন করে তার দাবী জানাই।

এব্যাপারে ইজারাদারগণ বলেন, এই ইজারার অধিকাংশ জায়গার অবস্থান হচ্ছে নদীর পাড়ে। পরিবেশ ও মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা নদীর পাড়ে না গিয়ে নদীর মধ্যেই বালু উত্তোলনের চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। গুটি কয়েক মুনাফালোভীরা তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের জন্য অপতৎপরতা অব্যাহত থাকায় নদী বন্ধ হলে ৩০হাজার শ্রমিক পরিবারের লক্ষাধিক জনসংখ্যার অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হবে এই অশংকায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে চরম হতাশা। এছাড়াও যাদুকাটা নদী নিয়ে ঐ কুচক্রিমহল নদী বন্ধ করে রাজনৈতিক পতিপক্ষকে ফাঁসাতে গভীর স্বযন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত্য কর্মকর্তা(ওসি)আতিকুর রহমান জানান,যাদুকাটা নদীতে নিয়মের বাহিরে কোন অনিয়ম হলে পুলিশ কাউকে ছাড় দেবে না। সে যত বড় ক্ষমতাশালী হউক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যনার্জি বলেন, পরিবেশ সরকারী নিয়ম মেনে যাদুকাটা নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলন করাসহ যে কোন কাজ করা যাবে এর ব্যাতয় ঘটলে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্থির ব্যবস্থা করা হবে। কোন ছাড় পাবে না কেউ।

দেশদর্পণ/এসএস/এসজে