জীবননগরে সরকারি বই বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা বাসষ্টান্ডে সদ্য প্রতিষ্ঠিত একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে সরকারি বই বিতরনের অভিযোগ উঠেছে। অনিবন্ধিত বা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে ওই স্কুলে সরকারি বই বিতরণ করা হলো সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসীর। এ নিয়ে সুধী সমাজে নানাবিধ মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার দরুন একই এলাকার অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে একটি অভিযোগ এসেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর। অনিবন্ধিত উক্ত প্রতিষ্ঠানে কিভাবে বই বিতরণ হলো এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে সবাই।

জীবননগর- চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে জীবননগর শহরের অদূরে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে পেয়ারাতলা বাসস্টান্ড। পেয়ারাতলা মুলত ব্যাবসায়ীক এলাকা হিসেবে পরিচিত। পেয়ারাতলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার পাশাপাশি আরও দুইটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল চলমান রয়েছে।

এ অবস্থায় চলতি বছর পেয়ারাতলা প্রি-ক্যাডেট নামে আরও একটি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের শিক্ষা অফিস থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই তাদের কার্যক্রম চালু হয় এবং ছাত্রছাত্রীদের হাতে বই বিতরণ করেছে।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে, এমনিতেই যেনতেন ভাবে মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা মানসম্মত শিক্ষা পাচ্ছে না তার ওপর আবার এই নতুন প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে দুইটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল সহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকারি প্রাইমারি স্কুল। অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে নতুন কিন্ডার গার্ডেন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে অভিমত অনেকের। এমনিতেই অনেক দিন থেকেই এই সরকারি প্রাইমারি স্কুলটি ছাত্র-ছাত্রী সংকটে রয়েছে।

তার মধ্যেই নতুন করে একই স্থানে আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়া কতটুকু দরকার তা সংশ্লিষ্ট বিভাগের খতিয়ে দেখতে হবে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর এএমসিতে চাকরি

এলাকার সুধী ব্যক্তিদের দাবি কোন প্রকার সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে প্রথম বছরেই সরকারি বই সরবরাহ করলো। সাধারণত, বই সরবরাহ করতে হলে পূর্বেইঔ ছাত্র-ছাত্রীদের অনুকূলে বইয়ের চাহিদা দেওয়া লাগে উপজেলা শিক্ষা অফিসে। সেই মোতাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের বই বিতরণ করা হয়।

পেয়ারাতলার কয়েক জন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমনিতেই পেয়ারাতলায় একটি সরকারি প্রাইমারি সহ আরো দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলমান। আর নতুন করে যে পেয়ারাতলা প্রি-ক্যাডেট স্কুল হয়েছে তা আমাদের জানা নাই আমাদের জানামতে ওইটা একটা কোচিং সেন্টার ছিল। যদি এই বছর স্কুল প্রতিষ্ঠা করে থাকে তাহলে সম্পূর্ণ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়। এতে এই এলাকার ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীরা মানহীন পড়াশোনার কারনে অল্প সময়েই ঝড়ে পরবে।

কথা হয়, পেয়ারাতলা প্রি ক্যাডেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সোহেল রানার সাথে। বই বিতরণ এর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সরকারি বইগুলো বিভিন্ন উপায়ে জোগাড় করেছেন বলে জানান। কোথা থেকে জোগাড় করেছেন বলাতে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পেয়ারাতলা প্রি ক্যাডেট নামে কোনো প্রতিষ্ঠানকে আমরা কোনো অনুমতি দেইনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাহিদার বাইরে কিভাবে বই পেয়েছে তা অত্যন্ত কঠোরভাবে খতিয়ে দেখবো। অনিবন্ধিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী বই সরবরাহ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বই বিতরন বিষয়ে একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। অতিসত্বর তদন্ত করে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশদর্পণ/টিআর/এসজে