বিজয় দিবস উদযাপন মিটিতে রাজাকারের ছেলে !

মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস উদ্যাপন কমিটিতে স্বাধীনতা বিরোধী ও তালিকাভূক্ত রাজাকারের ছেলের নাম থাকায় সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন পড়েছেন অকেটা বেকায়দায়।

অভিযুক্ত’র নাম রফিকুল ইসলাম বিন বারী। তিনি জামালগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ও রাজাকার আব্দুল বারী চৌধুরীর ছেলে। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বিন বারীর প্রয়াত বাবা উপজেলার শাহপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বারী চৌধুরী ওরফে আব্দুল বারিকের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি সে সময় পাকহানাদার বাহিনীকে সহায়তা করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। রফিকুল ইসলাম বিন বারীকে মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের আলোচনা সভার উপ-কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত করায় এ ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছেন বিক্ষুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা।

আরও পড়ুন:
ব্রিটেনে ‘বাংলাদেশি‘ নারীদের জয়জয়কার
কেরানীগঞ্জের ভয়াবহতায় হতবাক চিকিৎসকরা
প্রকৃত আসামী প্রবাসে, চৌগাছার নিরাপরাধ আজিজ কারাগারে !

বিগত ১৫ নভেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি কমিটির সভায় তাকে বিজয় দিবসে আলোচনা সভার ১০ সদস্যের উপ কমিটির আহবায়ক হিসাবে অনুমোদন দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার কার্যালয়।

প্রস্তুতি সভায় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হয়।

উল্ল্যেখ, রাজাকার আব্দুল বারীক একাত্তরে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন। তার দালালি ও রাজাকার বাহিনীর প্রসঙ্গ মুক্তিযোদ্ধা গবেষক আইনজীবী বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু রচিত রক্তাক্ত ‘৭১, সুনামগঞ্জ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান রচিত গ্রন্থাবলীতে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।

শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বিন বারীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার প্রয়াত বাবা রাজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন না।

তবে কেন এমন অভিযোগ জানতে চাইলে উওরে তিনি বললেন, আমার বৈমাত্রেয় (সৎ) ভাই আব্দুর রউফ স্বাধীনতা বিরোধী ও রাজাকার ছিলেন কিন্তু তার কথা কেউ বলেন না। এর কারন সম্পর্কে পুন:রায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বড় ভাই আব্দুল মুকিত চৌধুরী জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য, মূলত তাকে রাজনৈতিকভাবে কোনটাসা করতে এ ধরণের প্রভাকান্ড ছড়ানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
‘গণতন্ত্র আজ জেল খানায় বন্দি’ — রুহুল কুদ্দুস

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা পাল বলেন, গত মাসে মিটিংয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় এই কমিটি গঠন করা হয় হয়েছে। ওই সভায় রফিকুল ইসলাম বিন বারীকে বিজয় দিবসে আলোচনা সভার আহবায়ক হিসাবে নাম প্রস্তারের পর তা অনুমোদন করা হয় কিন্তু সে সময় আমাকে তার পিতা যে স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন সে বিষয়টি অবহিত করেননি।

শুক্রবার জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ বলেন, রফিকুল ইসলাম বিন বারীর বাবা আব্দুল বারী চৌধুরী একাত্তরের দালাল ও রাজাকার ছিলেন, তাকে কী করে বিজয় দিবসের আলোচনা সভার উপ কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে, কে তাকে এ দায়িত্ব দেয় তা তো কেউ আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করেননি।

১৩ ডিসেম্বর,২০১৯  at ২৩:৩৩:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/হাসোআ/তআ