প্রকৃত আসামী প্রবাসে, চৌগাছার নিরাপরাধ আজিজ কারাগারে !

অপরাধ না করেও নামের মিল থাকায় যশোরের চৌগাছার আব্দুল আজিজ ওরফে আজিজুর রহমান (৬১) বিনা অপরাধে জেল হাজতে বলে অভিযোগ। তিনি উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে। গত ৯ ডিসেম্বর রাতে চৌগাছা থানার এএসআই আজাদের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পরে আদালতে তোলা হলে আব্দুল আজিজকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি বিনা অপরাধে জেল হাজতেই রয়েছেন।

নামের মিল থাকায় আব্দুল আজিজকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন পরিবারের লোকজন। প্রকৃত আসামি একই গ্রামের জীবিত মো. আহাদ আলী ছেলে আজিজুর রহমান (আব্দুল আজিজ) বর্তমানে কাতার প্রবাসী।

২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর রাতে বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের লোহিত মোহন সাহার ছেলে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তিনি। ২০১১ সালে ৩০ মার্চ যে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছির তাতে ৭ নম্বরে ছিল আজিজুর ওরফে আব্দুল আজিজের নাম। যেখানে তার বয়স উল্লেখ করা হয় ৩০ বছর। পরের বছরের (২০১২) ১ মার্চ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নির্দেশে কারাগারে পাঠায়। তবে গ্রেপ্তারের চারদিন পরেই জামিনে মুক্তি পান আজিজুর।

বছর দেড়েক আগে মামলা চলাকালীন আজিজুর জীবিকার সন্ধানে কাতার চলে যান। এরপর থেকেই তিনি আদালতে গরহাজির থাকেন। তার স্থলে হাজিরা দিতে থাকেন তার বাবা আহাদ আলী। তবে যশোর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৪ গত ৭ নভেম্বর আজিজুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে এএসআই আজাদের নেতৃত্বে পুলিশ মৃত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

সিংহঝুলি গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, আসামি আজিজুর রহমানের বয়স বর্তমানে বয়স ৪০ বছর। তিনি বর্তমানে কাতার প্রবাসী। আর যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই আব্দুল আজিজের বয়স ৬১ বছর। আর আসামি আজিজুর রহমানের বাবা আহাদ আলী কারিগর জীবিত আছেন। কিন্তু গ্রেপ্তার করা আব্দুল আজিজের বাবা মো. আহাদ আলী মৃত।

গ্রেপ্তার আব্দুল আজিজের ভাতিজা রাজু বলেন, চাচাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ কোনো কথাই শোনেনি। সেই মুহূর্তে বলতে না পারলেও পরদিন পুলিশকে জানানো হয় এই আজিজ সেই আজিজ নন। কিন্তু কারো কথায় কর্ণপাত করেনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এএসআই আজাদ বলেন, নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়ার পরই আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তার পরিবার থেকে এটা জানানো হয়নি তিনি আসামি আজিজ নন।

তিনি আরো বলেন, আসল বা নকল, যা-ই হোক আসামি হিসেবেই আব্দুল আজিজ কারাগারে রয়েছেন। তিনি মামলার আসামি না হলেও আদালতে সেটা প্রমাণ করতে হবে।