উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিত!

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। রাজাকার পরিবারের সন্তান, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা সুবিধাবাদী নেতা-কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী ৪ ডিসেম্বরের কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এর সাথে সদ্য গঠিত ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকল কমিটিও স্থগিত করা হয়েছে।

আজ সন্ধ্যায়, কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এম এ মতিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, কেন্দ্র থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক তাকে টেলিফোনে কেন্দ্রের নির্দেশনা জানিয়েছেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ লক্ষে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

থেতরাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রফিক অভিযোগ করে বলেন, তাকেসহ দু’জনকে সভাপতি পদে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়া হয়নি। যে দু’জনকে তারা সুযোগ করে দেন, তাদের মধ্যে সভাপতি পদে ভোটাভুটি হলে আব্দুল জলিল ১৫৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর নেতাদের পছন্দের প্রার্থী বদিউজ্জামান ভোট পান মাত্র ৬টি। একই ভাবে সাধারণ সম্পাদক পদে আনিছুর রহমান ভোট পান ১৫০টি। নেতাদের পছন্দের প্রার্থী রঞ্জিত ভোট পান ৯টি।

দলদলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হন কামরুজ্জামান রানা মুন্সি। তিনি ছিলেন একজন বিশেষ নেতার পছন্দের প্রার্থী। তার বাবা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিয়ার রহমান মুন্সি। এছাড়াও তিনি গত ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে নৌকা প্রার্থীর বিরোধীতা করেন। এ কারণে ওই কাউন্সিল অনুষ্ঠানে বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় কাউন্সিল পন্ড করে দেয় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

আরো পড়ুন:
চবিতে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে মারধর, অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক
সরকার একটি উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে : এমএ মান্নান

এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের শুরু থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার পরিবারের সন্তান ও বিএনপি-জামাত থেকে আসা ব্যক্তিদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চলে। এছাড়া পদের প্রভাব খাঁটিয়ে, নিজস্ব লোকজনদের সভাপতি সম্পাদক সহ বিভিন্ন পদে অগণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচিত করার ঘটনা ছিলো দলের তৃনমূলে ব্যাপক আলোচিত।

দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উমর ফাকরু মঙ্গা জানান, বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিটির ব্যাপারে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ করেন।

কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন তালুকদার বলেন, নেত্রীর নির্দেশে উপজেলার সকল কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সকল অনিয়ম দুর করে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টুর সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদ্য অধ্যাপক এম এ মতিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরাই কাউন্সিল স্থগিত চেয়েছিলাম। কেন্দ্র এসে দেখুক আমরা কি অনিয়ম করেছি।”

ডিসেম্বর ০২, ২০১৯ at ০০:৩৩:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম