ডেঙ্গু আক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, দৌলতপুরে দাফন সম্পন্ন

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুমতারিনা মাহি ঐশ্বর্য। -ফাইল ছবি।

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুমতারিনা মাহি ঐশ্বর্য (২২) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চকদৌলতপুর এলাকায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর আশা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুমতারিনা মাহি ঐশ্বর্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তিনদিন আগে তাকে ঢাকার সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার একপর্যায়ে অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। পরে সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এদিকে ঢাকা থেকে ঐশ্বর্য’র মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স সোমবার গভীর রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে তার গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছায়। এক নজর দেখার জন্য তখনো বহু মানুষ সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। প্রাণঘাতি ডেঙ্গুতে অকালেই মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন বাবা-মা।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় দৌলতপুর উপজেলার চকদৌলতপুর শেখপাড়া গোরস্থান মাঠে মুমতারিনা মাহি ঐশ্বর্য’র জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ রেজাউল হক চৌধুরী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শরীফ উদ্দিন রিমন ও দৌলতপুর মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়া সর্বস্তরের বিপুলসংখ্যক মানুষ এই জানাজায় অংশ নেন। পরে শেখপাড়া গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। মেধাবী শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য’র আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুমতারিনা মাহি ঐশ্বর্য দৌলতপুর মডেল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আব্দুল মজিদের ছোট মেয়ে। এর আগে ঐশ্বর্য দৌলতপুর কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে এখান থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। ঢাকায় একটি স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি ফার্মে কর্মরত বড় বোন মেহজাবিন মৌয়ের বাসায় থেকে পড়ালেখা করছিলেন ঐশ্বর্য।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীর তালিকা। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৫৬ জনের। এর মধ্যে ৩০৫ জনই চলতি আগস্ট মাসে মারা গেছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকায়ই ৪১০ জন এবং ঢাকার বাইরের ১৪৬ জন রয়েছে। এদের মধ্যে ২৩৬ জন পুরুষ আর ৩২০ জন নারী রয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৪২ জন।

আগষ্ট ০৫,২০২৩ at ১৬:১৩:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কাই/ইর