যশোর পৌরসভায় অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা একবেলার বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে মানুষ

ছবি- সংগৃহীত।

যশোর পৌরসভার অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে একবেলার বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ সড়ক ও আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকেছে। দীর্ঘদিন ড্রেন পরিষ্কার না হওয়ায় ড্রেনের ময়লা আবর্জনা পানিতে ভাসছে। যা নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে যাতায়াত করতে পারছেন না বিভিন্ন এলাকার লোকজন। এমনকি শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। পৌরসভা বলছে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলমান।
যশোর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে কয়েকদিন মাঝে মধ্যে হালকা ও ভারি বৃষ্টিপাত হলেও বুধবার দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত ছিল ভারী বৃষ্টি। আজ বৃহস্পতিবারও সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী থেমে থেমে বৃষ্টি হবে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, রাস্তার পাশের বেশিরভাগ ড্রেন দিয়ে পানি নামছে না। এ কারণে উপচে সড়ক ডুবে যাচ্ছে। কিছু কিছু সড়কের কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। পাড়া, মহলার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি পানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পৌরসভার রেলবাজারের অবস্থা খুবই বাজে। পানি উঠে যাওয়ার কারণে সবজি ও মাছের বাজার বন্ধ হয়ে যায়।

আরো পড়ুন :

> রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন নিহত
> নাটকীয় জয়! ফাইনালে মেসির ইন্টার মায়ামি

একই অবস্থা খড়কির শাহ আবদুল করিম সড়কে। এমএম কলেজের দক্ষিণ গেটের পাশে খড়কি মোড়ে হাঁটুপানি। চলাচল অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়া, শহরের কারবালা, স্টেডিয়ামপাড়া, সার্কিট হাউজপাড়া, রায়পাড়া, শংকরপুর, ঘোপ কবরস্থানপাড়া, বেজপাড়া, তালতলা, নলডাঙ্গা রোড এলাকা, টিবি ক্লিনিকপাড়া, আশ্রম রোড এলাকা, বরফ কলের মোড়, লোন অফিসপাড়া, বড় বাজারের আবাসিক এলাকা, ষষ্ঠীতলা, ফায়ার সার্ভিস অফিস ও জেলা শিক্ষা অফিসের ভেতর পানিতে একাকার হয়ে যায়। বৃষ্টিতে শহরের অনেক রাস্তার ওপর পানির স্রোত বইতে দেখা যায়। এ কারণে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

বেজপাড়া রানার অফিস এলাকার আইয়ুব হোসেন বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক হাঁটু পানিতে ডুবে যায়। পিটিআই সড়কে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। মাসখানেক ধরেই সড়কটিতে পানি জমে থাকছে। টিবি ক্লিনিক মোড় পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। টিবি ক্লিনিকপাড়ার অধিকাংশ সড়কের অপরিকল্পিত ড্রেন দিয়ে পানি সরছে না। ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে।

বেজপাড়ার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, পানিতে তলিয়ে গেছে যশোর শহর। বেহাল অবস্থা রাস্তার। কিন্তু পৌরসভার কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। মেয়র হায়দার গনী খান পলাশসহ পৌর কর্তৃপক্ষের কোন কর্মকর্তাকে পানি নিষ্কাশনের কাজ করতে কোথাও দেখা যায়নি।  তিনি আরও বলেন, পৌরসভার কর্মকর্তারা তেমন কোনো খোঁজখবর নিতে আসেন না। অথচ হোল্ডিং চার্জসহ অন্যান্য সার্ভিস চার্জ নিতে ভুল করেন না তারা।

স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। স্টেডিয়ামপাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলেও অবহেলিত। এই এলাকায় পানি জমে গেছে।

পৌরসভার মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ বলেন, বর্ষার সময় একটু পানিতো জমেই। তারই অংশ হিসেবে শহরের বেশকিছু স্থানে পানি জমেছে। ড্রেনে ময়লা জমার কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, জনগণ যদি ড্রেনে ময়লা ফেলে তাহলেও তো বন্ধ হয়ে যাবেই। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা, করেছেন যাতে কেউ আর ড্রেনে ময়লা না ফেলে।

আগস্ট ২৪, ২০২৩ at ১২:২২:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর