শিবগঞ্জে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে বালাম বই না থাকায় দলিলের তথ্য হারানোর শঙ্কা

বগুড়ার শিবগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে বালাম বই না থাকায় অলস সময় পার করছেন শিবগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস এর নকল নবিশগণ। তারা কাজ না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। বালাম বই না থাকায় জমি দলিলের তথ্য হারানোর শঙ্কা।

দীর্ঘ প্রায় সাত মাস ধরে বালাম বই না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন দলিলের দাতা-গ্রহীতাসহ সাধারণ মানুষ। ফলে অফিসে জমি সংক্রান্ত কাজে প্রতিনিয়তই বাড়ছে নানা জটিলতা। বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন দলিলের নকল তুলতে আসা লোকজন। জানা যায়, শিবগঞ্জ সাব রেজিষ্ট্রী অফিসে ৫৬জন নকল নবিশ নিয়মিত বালাম লেখেন। গত প্রায় ৮ মাস যাবৎ বালাম বই সরবরাহ না থাকায় তারা কাজ করতে পারছে না। তারা অফিসে আসেন এবং কাজ না থাকায় অলস সময় পার করে বাড়িতে ফিরে যায়। বালাম বই ভূমি সংক্রান্ত একটি রেকর্ড বই। উপজেলার সব জমির রেকর্ড থাকে বালাম বইয়ে। রেজিষ্ট্রি অফিসে উপজেলার কোনো জমি বিক্রি কিংবা ক্রয় করা হলে তার সব তথ্য বালাম বইয়ে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়।

পরবর্তীতে জমি সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রয়োজন হলে কিংবা জমির নকল তুলতে গেলে বালাম বই থেকে নকল নবিশগণ তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। ২০২০ সাল মাত্র ২ হাজার দলিল বালাম বই এ লিবিপদ্ধ হলেও তৎপর থেকে বালাম বই সরবরাহ না থাকায় চলতি অক্টোবর পর্যন্ত যেসব দলিল রেজিষ্ট্রি হয়েছে তা বালাম বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। বালাম বই না থাকায় প্রায় ৩৪ হাজারের মতো দলিল পড়ে আছে। বালাম বই না থাকায় জমি দলিলের তথ্য হারানোর শঙ্কা রয়েছে। বালাম বই না থাকায় অফিসে জমি সংক্রান্ত কাজে প্রতিনিয়তই বাড়ছে নানা জটিলতা।

বিড়ম্বনার স্বাকীর হচ্ছে দলিল গ্রহীতা ও দাতা সহ সাধারণ মানুষ।
শুধু তাই নয় সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম বড় খাত হচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। সরকার এখান থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। এ রাজস্ব আদায়ে ও সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে নকল নবিশগণ। এরা সাধারনত দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন হওয়ার পর বালাম বইয়ে লিপিবদ্ধ (সংরক্ষণ) কাজ ও নকল দলিল প্রদানে মূল সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করে থাকেন।

আরো পড়ুন :
>> চিলমারীতে শুভসংঘের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ
>> চিলমারীতে খালের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

দলিলের নকল তুলতে আসা নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আমাদের দলিলের তথ্য না বালাম বইয়ে উঠেনি। তাই নলক নিতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। বালাম বই না থাকায় আমরা দলিলের নকল তুলার জন্য অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে নকল নবিশ এর সভাপতি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা ৫৬জন নকল নবিশ নিয়মিত অফিসে বালাম লেখি। কিন্তু বালাম বই না থাকায় আমরা বর্তমানে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। রুহুল আমিন জানান, আমার বালাম লেখার জন্য আমরা প্রতি পৃষ্ঠা আগে পেতাম ২৪ টাকা বর্তমানে বেড়ে তা হয়েছে ৩৬ টাকা। কিন্তু বালাম লিখবো তা বালাম বই না থাকায় বালাম লেখা সম্ভব হচ্ছে না।

আমিনুর রহমান জানান, ৭ মাস যাবৎ বালাম বই না থাকায় আমরা অফিসে আসি আর যাই। বর্তমান বাজারের যে অবস্থা আমাদের আয় না থাকলে আমরা কি খাবো আর কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমাদের তো সরকারি কোন বেতন ভাতা নেই। বালাম লেখলে টাকা পাই, না লেখলে পাই না। নাহার বেগম বলেন, বালাম বই না থাকায় আমরা নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছি। আমরা বাড়িতে কাজ ফেলে অফিসে আসি কিন্তু অফিসে কাজ না থাকায় আমরা অলস সময় পার করছি।

এব্যাপারে সাব রেজিষ্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, ওপর মহলে বইয়ের বিষয়ে অবগত করছি। অতিদ্রæত এ বইগুলো সরবরাহ করা হবে বলে আমি আশাবাদী। তিনি আরো বলেন, ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার দলিল রেজিষ্ট্রি হয়েছে, বালাম বই না থাকায় তা লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। দলিলের নকল তুলার জন্য অতিরিক্ত টাকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।

আগস্ট ২১ , ২০২৩ at ১৬ : ৫৮ : ০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/সামি/শাস