জাবিতে ছাত্রলীগের ছিনতাইয়ের কবলে নোবিপ্রবির শিক্ষিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষিকার টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি নোবিপ্রবির ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম এলাকায় এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মারুফুল হাসান (মারুফ) ও লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জয় পাল।

আরো পড়ুন :

> ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে : ড. আব্দুর রাজ্জাক
> কে হচ্ছেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী?

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ছেলে বন্ধুকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম এলাকায় ঘুরতে যান নোবিপ্রবি’র শিক্ষিকা। এ সময় মোটরসাইকেলে মারুফ ও জয় পাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা ওই শিক্ষিকাকে বহিরাগত কিনা জানতে চায়। তখন তিনি অইডি কার্ড বের করেন। তবুও বহিরাগত জানতে পেরে তাদের কাছে থাকা টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এদিকে ঘটনার সময় ওই শিক্ষিকা ছিনতাইকারীদের ছবি ও বাইকের ছবি তুলে রাখেন। পরবর্তীতে তিনি তার পরিচিত সহকর্মীদের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুমতাহানা মৌ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে সহকারী অধ্যাপক মুমতাহানা মৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল মিয়া স্বাধীনের সহায়তায় অভিযুক্তদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হন। এ সময় অভিযুক্ত জয় পাল ও মারুফ বাংলা বিভাগে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বিকাশের মাধ্যমে ছিনতাই করা টাকা ফেরত পাঠায়।

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুমতাহানা মৌ বলেন, ‘ওই শিক্ষিকা আমার পূর্ব পরিচিত না। নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত একজন শিক্ষকের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের দু’জন শিক্ষার্থী ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রক্টরকে বিষয়টি জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে নোবিপ্রবি’র ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকাকে ফোন করলে তিনি নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘আমি প্রক্টরের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছি। ছিনতাইয়ের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত মারুফুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। এই ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।’

আরেক অভিযুক্ত জয় পাল বলেন, ‘আমরা তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করি। তারা বহিরাগত হওয়ায় নিরাপত্তা শাখার হাতে তুলে দিতে চাই। এ সময় তারা নিজেদের নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মিষ্টি খাওয়ার জন্য আমাদের কিছু টাকা দেয়। পরে ওই শিক্ষিকা বাংলা বিভাগে অভিযোগ জানালে আমরা ভুল স্বীকার করে মিষ্টি খাওয়ার জন্য দেওয়া টাকা বিকাশের মাধ্যমে ফেরত পাঠিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি জেনেছি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অভিযোগ করতে চাননি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই ঘটনা ব্যবস্থা নিবে। অভিযুক্তদের আগামী দু’য়েক দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে।’

আগস্ট ১০, ২০২৩ at ১৯:০৯:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/নাউ/ইর