ভুয়া স্বাক্ষরে ভিজিডি ও ভিজিএফের চাল আত্মসাত, তদন্তে ধীরগতি

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলাধীন তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (জহর)এর বিরুদ্ধে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে ভিজিডি ও ভিজিএফের চাল আত্মসাতের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তদন্তে ধীর গতির অভিযোগ উঠেছে ।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানাযায়, গত ৩০ মে জেলা প্রশাসন চাল আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয় মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। কিন্তু দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত শুরু করেনি উপজেলা প্রশাসন। সম্প্রতি উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তানভীর আহমেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে তারা এখনো তদন্ত শুরু করেননি। এনিয়ে অভিযোগকারী তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নুর কবি মিয়া তদন্তে ধীর গতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অভিযোগকারীর সাথে কথা বলে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তেতুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য আবুল কাশেম সাইফুল ২০২২ সালে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার কর্তৃক প্রদেয় ভিজিএফ কার্ড ও প্রতিমাসে দেওয়া ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে চাল উপকারভোগীদের টিপ-স্বাক্ষর জাল করে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। ভিজিএফ চাল বিতরণের মাষ্টাররোলে অনেক উপকারভোগীর নাম দুইবার করে লেখা। আবার কারও নাম থাকলেও বাবার নাম ও ঠিকানা কিই নেই। কিছু কার্ডের ক্ষেত্রেও তারা একইভাবে কয়েকজন উপকারভোগীকে চাল দিয়ে বাকিদের টিপ-সই জাল করে চাল তুলে আত্মসাৎ করেন।

এসকল বিষয় উল্লেখ করে ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও ফাগুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরকবি মিয়া গত ৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের সাথে প্রমাণসহ যুক্ত করে জমা দেন তিনি। একই অভিযোগ তিনি ময়মনসিংহ বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আঞ্চলিক কার্যালয়ে করেন। পরে দুদকে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে নেত্রকোনা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস গত ২৮ এপ্রিল উভয় পক্ষকে ডেকে তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে বলেন।

আরো পড়ুন :
>> বেড়ায় শেখ কামালের ৭৪ তম জন্মবার্ষিকী পালিত
>> ইবিতে পোষ্য কোটায় শর্ত শিথিলের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো কর্মকর্তাদের আন্দোলন

এদিকে জেলা প্রশাসনে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩০ মে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিসয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে নির্দেশনার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সবেমাত্র তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখনো তদন্ত শুরু করেনি কমিটি। এ নিয়ে অভিযোগকারী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান মোহনগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ শনিবার (৫ আগস্ট) জানান, গত সপ্তাহে আমি এ বিষয়ে নির্দেশনা পেয়েছি। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে নোটিশ করবো। সেইসাথে তদন্ত কাজ শুরু করা হবে। তদন্ত কমিটির অপর অপর দুই সদস্য হলেন- মোহনগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তাদের সাথে পরামর্শ করে আগামী সপ্তাহে চেয়ারমানকে নোটিশ করা হবে।

মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তারা তদন্ত কাজ শুরু করবেন।

আগস্ট ০৫ , ২০২৩ at ২০ : ৫০ : ০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রিকাগু/শাস