সরকারি টাকায় নির্মিত সেড ঘর বাজার বনিক সমিতি দখলের পায়তারা

টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা বাজার এলাকায় সরকারি খাস জমির উপর সরকারি খরচে নির্মিত সেড ঘরটি দখল করে বাজার বনিক সমিতির অফিস ও কক্ষ ভাড়া দেওয়ার পায়তারা চলছে এমন অভিযোগ করছে এলাকাবাসী।

ফলদা বাজার কেন্দ্র স্থলে ফলদা চন্ডিপুর মৌজার ২০৯১/৬৫৪৭ নং দাগের খাস খতিয়ানের ভূমির উপর বাজার উন্নয়নের অংশ হিসাবে সেড ঘর নির্মানের দরপত্র আহবান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর। কার্যাদেশ পায় ফলদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুল হক তালুকদার দুদু।  সেড ঘরটি নির্মাণ কাজ শেষ করে কাঁচা বাজার হিসাবে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। ঝড় বৃষ্টির সময় খোলা আকাশের নিচে কাঁচামালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচা-কেনা করছে ব্যবসায়ীরা।

আরো পড়ুন :

> চলন্ত গাড়িতে চালকের হার্ট অ্যাটাক : দুর্ঘটনায় গাড়িচালকসহ নিহত ২
> পাইকগাছার অবহেলিত জনপদ উত্তর গড়েরআবাদ রাস্তা

জনবহুল এ বাজারের বাঁশ পলিথিন দিয়ে কেউ কেউ ছোট টোং তুলে ব্যবসার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার বাদে প্রতিদিনই বসে এখানকার বাজার। আবার কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে বসানো হয় গরু ছাগলের হাট। বাজারটি দীর্ঘ দিনের পুরাতন হলেও তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে। বছরের পর বছর পার হলেও বাজার উন্নয়নে কাজ করেনি কেউ। বাজার সংলগ্ন উত্তর পাশে বড় পরিসরে রয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের নাট মন্দীর। বাজারের  চারিপাশে রয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন দোকানপাট। বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে সামান্য পরিসরে চলে দূর দুরান্ত থেকে আসা খুচরা ব্যবাসায়ীদের ব্যবসা। সামান্য বৃষ্টি হলে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এক সময় নাট মন্দীরেই চলতো ব্যবসা। বসতো দুধের ও কাঁচা শাঁক সবজির বাজার। মন্দীরের নিরাপত্তায় চারিদিকে দেওয়া হয় বেড়া। তার পর থেকে খোলা আকাশের নিচেই বসে আসছে কাঁচা বাজার। ঝড়-বৃষ্টির সময় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গত বৎসর ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেড ঘর নির্মান করে দেন ইউনিয়ন পরিষদের তত্তবধানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদ্প্তর।

 স্থানীয়দের অভিযোগ কাজ শেষে খুচরা ব্যবসায়ীদের সেড ঘরে বসে ব্যবসা করার কথা থাকলেও সেখানে বসতে দেওয়া হচ্ছে না ব্যবসায়ীদেরকে। এর মধ্যে ফলদা বাজার বনিক বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে সেড ঘরটি দখলে নিয়ে চারদিকের দেয়ালের কাজ শুরু করে দেন। দোকানপাঠ বসতে না দেওয়ায় টোল আদায়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়ে কাজের বাধা দেন বাজার ইজারাদার  নূরুল ইসলাম ও আলম । কাজের বাধা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যান বাজার বনিক সমিতির সভাপতি  রফিকুল ইসলাম।

পরে বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখা ও সেট ঘর ইজারাদারের আয়েত্তে দেওয়ার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন নূরুল ইসলাম। তিনি জানান ৩ মার্চ ২৩ সালে তিনি ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ডাকের মাধ্যমে বাজার ইজারা নেই। সেই সঙ্গে আরো অতিরিক্ত টাকা খরচে আমার ৫২ হাজার টাকার মত লাগে এ বাজার ইজারা নিতে। এমনিতে খরচ তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে, তারপরও ওই সেড ঘর দখল করে বাজার বসতে না দেওয়ায় আমার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ইজারাদার আলম জানান বাজারের উন্নয়নে ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য সরকার খাস জমিতে সেড ঘরটি তৈরি করে দিয়েছে। ঘরে বসে ঝড় বৃষ্টিতে বেচা কেনা হবে। আবার বিপদে আপদে সাধারণ জনগন এখানে আশ্রয় নিবে। সেড ঘর দখল করে বাজার বনিক সমিতির অফিস করবে এটা নিয়ম বহির্ভূত কাজ। তারা প্রভাব খাটিয়ে ঘর দখল করার চেষ্টা করছে।

বাজার বনিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খাস জমিতে সরকার যে সেড ঘরটি তৈরি করে দিয়েছে ,সেখানে বাজার বনিক সমবায় সমিতির অফিস করার জন্য জাতীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুমতি দিয়াছে। সেখানে আমরা এক অংশ ওয়াল করে অফিস করতেছি। বাকী অংশ ভাড়া দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন সেখানে কি করা যায় পরে দেখবো। সেড ঘর চারিদিকে সংস্কার করে অফিস করার জন্য সংসদ সদস্য ছোট মনির ১ লক্ষ টাকা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

ফলদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব নিজাম উদ্দিন জানান খাস জমিতে জবর দখল করে অফিস করার কোন নিয়ম নাই। বাজারে ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সেড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বাজার বনিক সমবায় সমিতির নামে অফিস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে  লিখিতবাবে আমার উবর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। সরকারি খাস জমিতে কোন ধরনে অফিস না করার নিষেধ করা হয়েছে।

জুলাই ২৪, ২০২৩ at ১৭:১৭:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মাহামা/ইর