দোররা মারার পর বিয়ে গ্রেপ্তার ৬

ছবি- সংগৃহীত।

বগুড়ার শিবগঞ্জে গ্রাম্য সালিশে দোররা মেরে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ ৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাতে এ বিষয়ে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছামছুল ইসলামের স্ত্রী (৩৫) বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ ইউপি সদস্য জিল্লুর রহমান, মাওলানা শাহিনুর রহমান, বিয়ের উকিল ইলিয়াছ আলী, গ্রাম্য মাতব্বর মোজাফ্ফর হোসেন, মোজাম হোসেন ও তোজাম মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

আরো পড়ুন :

> রাজাপুরে নিখোঁজের আটদিন পরে দুই স্কুলছাত্রীকে ফিরে পেল পরিবার
> শার্শায় ভাসুরের নির্যাতনে গৃহবধু হাসপাতালে ভর্তি

এর আগে গত শনিবার রাত ১১টার দিকে আটমূল ইউনিয়নের মালোগাড়ী গ্রামে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছামছুল ইসলামের স্ত্রী (৩৫) ও একই গ্রামের আব্দুল মমিন (৩৪) কে গ্রামবাসী হাতে নাতে আটক করে। আটকের পর রবিবার দুপুরে জোর করে তাদের বিয়েও পরানো হয়।

থানা সূত্রে জানা যায়, মালয়েশিয়া প্রবাসী ছামছুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বাহিরে থাকায় তার স্ত্রী (৩৫) ২ ছেলে নিয়ে স্বামীর বসত বাড়িতে বসবাস করতেন। একই গ্রামের আব্দুল মমিন তালুকদার (৩৪) তাদের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন।

শনিবার মমিন ওই বাড়িতে আবারো গেলে একটি কক্ষে তাকে আটক রাখে গ্রামবাসী। শালিস ডাকার পরদিন দফায় দফায় বৈঠক করে তাদের দোররা মারার সিদ্ধান্ত হয় এবং তাদের ২জনকে গোসল করে দেওয়ার পর বিয়ে দিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

মমিন তালুকদার বলেন, আমি ওই প্রবাসীর বাড়িতে গেলে কিছু লোক প্রথমে আমাকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে ওই প্রবাসীর স্ত্রী কেও আমার ঘরে তুলে দেয় তারা। লাইলী বেগম দুই ছেলে গ্রামের ইউপি সদস্য ও কয়েক জন গিয়ে মামলার বাদীকে দিয়ে স্বামী ছামছুল ইসলামকে তালাক করায়।

পরে জাহাঙ্গীবাদ গ্রামের মসজিদের ঈমাম মাওঃ শাহিনুর রহমানকে ডেকে আনা হয়। তিনি এসে দোররা মারার সিদ্ধান্ত দিলে গ্রামের আজাদুল নামের এক যুবক দুজনকে ১০১টি করে দোররা মারে। পরে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন।

মমিন আরও বলেন গ্রাম্য শালিশেই সব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিয়ের পর গ্রাম ছাড়তে নির্দেশ দেওয়ায় সন্ধ্যার আগেই তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়।

গ্রাম্য শালিশের রায় ঘোষণাকারী শাহিনুর রহমান বলেন ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী তাদের ১০১টি দোররা মারার সিদ্ধান্ত হয়। ১০টি বাঁশের কঞ্চি একসাথে বেঁধে ১০ বার এবং পৃথক একটি কঞ্চি দিয়ে একবার করে তাদের দোররা মারা হয়। এর পর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।

এব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ বলেন, এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে ৮জনের বিরুদ্ধ মামলা করেন। মামলার এজাহারনামীয় ৬জনকে আটক করে জেলহাজুতে প্রেরণ করা হয়েছে, অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

জুলাই ১১, ২০২৩ at ২১:০৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেপ্র/ইর